আজ, শুক্রবার সংসদে খারিজ হয়ে গেল মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ। অর্থাৎ এখন তিনি বহিষ্কৃত সাংসদ। তাতেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা সংসদ। বিরোধী সাংসদরা বিশেষ করে ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা বিক্ষোভ দেখালেন। পাশে দাঁড়ালেন। সংসদের বাইরে যখন মহুয়া হুঙ্কার ছাড়ছেন তখন বিজেপি বাদ দিয়ে সমস্ত সাংসদ কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে এসে দাঁড়ান। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা আচরণ করছে। সমস্ত আইন ভেঙে গায়ের জোরে খারিজ করল সাংসদ পদ। প্রতিবাদী কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হয়েছে। সম্পূর্ণ সংসদীয় রীতিনীতি ভেঙে এই কাজ হয়েছে। অভিযোগের হলফনামা যাচাই করা হল না। এতে বিজেপি কি পেল? বিজেপি লোকসভায় হারবে।’
এদিকে মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলার বাম–কংগ্রেস। সিপিএম থেকে কংগ্রেস নেতারা বিজেপির এমন আচরণকে তুলোধনা করলেন। বলা যেতে পারে, মহুয়া মৈত্র বাংলার বিরোধীদের মেলালেন। তৃণমূল কংগ্রেস তো তাঁর সাংসদের পক্ষে বলবেই। বিজেপি তো এই কাজ করে নিজেরা ঠিক সে কথা তুলে ধরবেই। কিন্তু সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা সংসদীয় রাজনীতিতে বিজেপির স্বৈরাচারী ভূমিকা নিয়ে চরম নিন্দা করলেন। আর তাতে ইন্ডিয়া জোট পোক্ত হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিষেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এদিন সরাসরি বিজেপিকে তুলোধনা করলেন মহুয়া মৈত্র ইস্যুতে। তৃণমূল কংগ্রেসকে সামান্য খোঁচা দিলেও আগাগোড়া দাঁড়ালেন মহুয়া মৈত্রের পাশে। সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রত্যেকেই রাইট টু ডিফেন্স করার অধিকার রয়েছে। মহুয়ার সম্পর্কে যিনি বলেছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না। মহুয়া মৈত্র যে ক্রস চেক করবেন, সেই সুযোগই দেওয়া হয়নি। তদন্তই হয়নি। আদানির বিরুদ্ধেও তদন্ত হল না। আর মহুয়ার বিরুদ্ধে চটজলদি একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তাঁর পদ খারিজ করে দেওয়া হল। মহুয়া সম্পর্কে তৃণমূলের নেতারা বলেছিলেন, এটা ওঁর ব্যক্তিগত লড়াই, লড়ে নিতে পারবেন। তৃণমূলের দ্বিচারিতা ধরা পড়ল। মহুয়া মৈত্রকে সমবেদনা কুড়ানোর সুযোগ করে দিলেন।’
আরও পড়ুন: সিভিক ভলেন্টিয়ারের রহস্যজনক মৃত্যু, খুন নাকি আত্মহত্যা? তদন্তে জয়নগর থানার পুলিশ
এদিন সংসদে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায় অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। সংসদীয় রাজনীতি তিনি ভালই বোঝেন। তার উপর বাংলা থেকে নির্বাচিত সাংসদ। অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘বেলা ১২টায় রিপোর্ট সাংসদদের হাতে এসেছে। তারপর ২টোর সময় আলোচনা শুরু হয়। এখানে ১২টার সময় বেরিয়ে রিপোর্ট ডাউনলোড করতে আরও সময় লেগেছে। ৪৯৫ পাতার রিপোর্ট। এত অল্প সময়ের মধ্যে কী করে কারও পক্ষে এত বড় রিপোর্ট পড়া সম্ভব? এই রিপোর্টে কোনও ভুল আছে কি না, তা কী করে বোঝা সম্ভব? এটা কোনও ছোট বিষয় নয়। এই সিদ্ধান্ত নতুন সংসদ ভবনে নজির হয়ে থাকবে। রিপোর্ট ভাল করে পড়ে দেখার জন্য অন্তত তিনদিন সময় দেওয়া হোক। এই বিষয়ে যথাযথ আলোচনা হওয়া দরকার। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁকে তো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত। এখানে মহুয়া মৈত্রকে অন্তত বলতে দিন। তথ্য প্রমাণ ছাড়া অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’