শেষ বেলার সিপিএমের মতো সম্প্রতি আত্মসমীক্ষার পথে হাঁটা শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। লকডাউনের রেশন ও আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে শো-কজ করা শুরু করেছে দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের। শনিবার এক লপ্তে প্রায় ১২ জন নেতাকে শো-কজ করেছে শাসকদল। তার মধ্যে রয়েছেন এক প্রাক্তন মন্ত্রীও।
লকডাউনের রেশন ও আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। ফলে দুর্নীতির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ওপর জেলায় জেলায় বিজেপির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার মধ্যে মানুষের ক্ষোভ কমাতে তাই দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে তারা। ইতিমধ্যেই আমফানের ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগে স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কার করেছে দল। শনিবার কোপ পড়ল মাঝারি মাপের নেতাদের ওপর।
শনিবার বর্ধমানে ৩ জন, বাঁকুড়ায় ৬ জন ও হুগলিতে ৩ জনকে শো কজ করেছে তৃণমূল। শো-কজের চিঠি গিয়েছে জেলা সভাপতিদের তরফে। শো কজের চিঠি পাওয়া নেতাদের মধ্যে নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও পূর্ব বর্ধমানের শ্রমিক নেতা ইফতেকার আহমেদের। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শো-কজের জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁদের। তবে দলের তরফে এও জানানো হয়েছে, কাউকে শো কজ করা হয়েছে মানেই সে দোষী নয়।
তৃণমূলের শো-কজকে চরম কটাক্ষ করেছে সিপিএম। বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূলের শোকজ হলো ঢপের কেত্তন। শো-কজ করার হলে যারা কোটি কোটি টাকা সরিয়েছেন তাঁদের করুন। তাহলে তৃণমূল খালি হয়ে যাবে।
বিজেপির দাবি, শুধু শো-কজ করলে হবে না। জনসেবার শপথ নিয়ে যে সব জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতি করেছে তাদের জেলে ভরার ব্যবস্থা করতে হবে। তা করতে পারবে না তৃণমূল।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে আত্মসমীক্ষা বিষয়টি বরাবরই শাঁখের করাতের মতো। তা টের পেয়েছে সিপিএম। এবার সেই পথে হাঁটছে তৃণমূল। এমনিতেই তৃণমূল ভাঙানোর জন্য মুখিয়ে রয়েছে বিজেপি। আর তৃণমূল নিজে থেকে কাউকে বহিষ্কার করলে আজ নয় তো কাল তাকে লুফে নেবে বিজেপি। তার পর তৃণমূলকে দিয়ে তৃণমূলেরই দফারফা করবে গেরুয়া শিবির।