তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’র পথে পা বাড়াল ছাত্রনেতা সুজিত শ্যাম। বরাবরই তিনি মুকুল ঘনিষ্ঠ। সুতরাং মুকুল রায় বিজেপিতে, আর সুজিত তৃণমূলে থাকেন কি করে! মুকুল রায় যখন তৃণমূল ছেড়ে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে সুজিতকে দেখা গিয়েছিল। এমনকী মুকুল রায়ের সঙ্গে দিল্লির বাড়িতেও ছিলেন সুজিত শ্যাম।
আর বুধবার হেস্টিংসে বিজেপি’র নির্বাচনী দফতরে সুজিত বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন মুকুল রায়ের হাত ধরে। তার আগে ফেসবুকে গেরুয়া রংয়ের পটভূমিকায় ইঙ্গিতপূর্ণ স্টেটাস দিয়েছেন সুজিত। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘১৬ বছরের সম্পর্ক ভাঙা সহজ নয়। কিন্তু জীবনে এমন কিছু সময় আসে, যখন সামনে তাকাতে হয়’। আসলে ১৬ বছর আগে, ২০০৪ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুজিত। তখনও তাঁর গুরু ছিলেন তৎকালিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়।
কে এই সুজিত শ্যাম? জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুজিত ২০১৪ সালে বাঁকুড়া লোকসভায় তৃণমূলের আনকোরা প্রার্থী মুনমুন সেনকে জেতানোর বিষয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তারপর ক্রমশ দলের মূলস্রোত থেকে হারিয়ে যেতে থাকেন এই ছাত্রনেতা। তাঁকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। ফলে তৃণমূলে ‘বিক্ষুব্ধ’ হিসাবেই থেকেছেন সুজিত।
তৃণমূল সূত্রে খবর, সুজিত বরাবরই মুকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। মুকুল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও সেই যোগাযোগ অটুট ছিল। বুধবার সুজিত বলেন, ‘মুকুল দার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত এবং সামাজিক সম্পর্ক ভাল। যে তৃণমূলকে দেখে ২০০৪ সালে প্রথম রাজনীতিতে এসেছিলাম, সেই তৃণমূল এখন আর নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করতে এসেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে সামনে দাঁড়িয়ে যাঁরা দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকে ২০০৭ সালে ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গণহত্যার পর ২৪ মার্চ খোলা চিঠি দিয়ে সিপিএমকে সমর্থন করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। তাঁরাই ২০০৯ সালে রবীন দেব যখন দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে মমতা’দির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তাঁর হয়ে প্রচার করেছিলেন। তাঁরাই এখন মমতা’দির ছায়াসঙ্গী হয়ে তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’