দক্ষিণ কলকাতায় অটিজম আক্রান্ত যুবককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল দু’দিন আগেই। রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল তাঁকে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে টালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। রাসবিহারী মোড়ে দেখা হতেই তিনজন ওই যুবককে নানা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। তারপর গালিগালাজ করে ছেড়ে দেওয়ার জন্য শর্ত দেয়। কিন্তু সেই শর্তে রাজি না হওয়ায় অটিজম আক্রান্ত যুবককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছিল। এবার তাঁদের শাস্তি দেওয়া হল।
আক্রান্ত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, রাস্তা আটকে ওই যুবককে নাচতে বলে অভিযুক্তরা। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার এটাই শর্ত ছিল। কিন্তু এই শর্ত না শোনায় ব্যাপক মারধর করা হয়। পরিবারের অভিযোগ পেয়ে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। আর তিনজনকে আটক করে। ওই তিনজন নাবালক হলেও খুব ছোট নয়। তাই তাদের পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়। আর ওই তিনজন–সহ পরিবারের সদস্যদের হাজির করা হয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে। তখন ওই তিনজনই ভেঙে পড়ে। তবে বিচারক তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ১০ দিনের জন্য হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনাটি ঘটেছিল রাসবিহারী মোড়ে। ওই আক্রান্ত যুবক টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করতে হয়েছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গ অটিজম সোসাইটিকে। তবে এখন তারা নিজেদের ব্যবহারে লজ্জিত বলে আদালত এবং পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। অটিজম আক্রান্ত ওই যুবকের নাম অমিত্রজিৎ বিশ্বাস। যাঁর উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছিল। আর যারা এই কাজ করেছিল তাদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ছেলেরা বলেছে অনিচ্ছাকৃত ভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা না ঘটলেই ভাল হতো। সিএফএল ম্যাচ দেখে ফেরার পথে রাসবিহারী মেট্রো স্টেশনের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: সরিয়ে দেওয়া উপাচার্যদের কর্মসমিতিতে নিয়োগ, বোসের বিরুদ্ধে ফোঁস শিক্ষা দফতরের
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় অটিজম আক্রান্ত যুবককে রাস্তায় ফেলে মার, অভিযুক্তদের ধরতে ব্যর্থ পুলিশ
অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের ওই তিনজন জানিয়েছে যে, তারা যে ভুল করছে সেটা তারা উপলব্ধি করতে পারেনি। তবে অমিত্রজিৎ বারবার সতর্ক করেছিলেন এই কাজ ভুল এবং বড় শাস্তি কপালে জুটবে। তারপরও চৈতন্য হয়নি তাদের। এই তিনজন সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। এবার কলেজে ভর্তি হবার সময় হোমে থাকতে হচ্ছে। ফলে এখন তারা নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে বলে পরিবার সূত্রে খবর। এই তিনজন নাবালকের বাবা কর্মসূত্রে বুক স্টলের মালিক, পোলট্রিক ব্যবসায়ী এবং কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার। এই তিনজনের পরিবার চেতলার বাসিন্দা। অপরাধ স্বীকার করেছে। আর ভবিষ্যতে এমন হবে না বলেও পরিবারকে জানিয়েছে।