জমা জলেই লুকিয়ে ছিল বিপদ। কয়েক ধণ্টার ব্যবধানে শহরের দুই প্রান্তে লুকোনো সেই বিপদের কবলে পড়ে মারা গেলেন দুই যুবক। বৃহস্পতিবার রাতের পরে শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ শহরতলীর দুই পৃথক জায়গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। ক্ষোভে সিইএসসির গাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। এমনকী, পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে পাটুলিতে। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে জোকায়।
এদিন পাটুলিতে জমা জলে মাছ ধরতে নেমেছিলেন এক যুবক। সেখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি এলাকায় জমে থাকা জলে মাছ ধরতে নেমেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল। প্রত্যেক্ষদর্শীদের বক্তব্য, জলে নামতেই আচমকা ওই যুবক জলে পড়ে কাতরাতে শুরু করেন। জলের মধ্যে ছটফট করছিলেন তিনি। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়েও ব্যর্থ হন স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জলের মধ্যে তাঁকে ধরে টানতে গেলে বিদ্যুতের ঝটকা খান উদ্ধারকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে তারা সরে যেতে বাধ্য হন।
অন্য দিকে, জোকার নবপল্লির কাছে জলের মধ্যে তার ছিঁড়ে পড়েছিল। সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম মানিক বাড়ুই(৩৬)। ওই ব্যক্তি হরিদেবপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁকে জমা জলের মধ্যে মোটরবাইক সমেত পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। রাস্তা থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটবর্তী বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মানিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রবল ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ওই এলাকায় জল জমে গিয়েছিল। জমা জলের মধ্যে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। মানিক তা খেয়াল করতে না পেরে, বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে চলে আসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
সিইএসসির তরফে জানানো হয়েছে, বিদ্যুবাহী তার ছেঁড়েনি। কিন্তু আর্থিংয়ের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, আর্থিংয়ের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। এক্ষেত্রে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই যুবকের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। সিইএসসির আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছেন। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই দুই যুবকের।