সরকারি–বেসরকারি বাসের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের পরিবহম দফতরকে আগেই প্রস্তাব দিয়েছিল বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি। এবার আরও বেশি সংখ্যায় ইলেকট্রিক বাস নামানোর জন্য সুপারিশ করল বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি। এই বাসের ভাড়া পরিষেবার তুলনায় কম। অথচ আরামদায়ক সফর করা যায়। তাই এখন যে বাসগুলি রাস্তায় চলছে সেগুলিকে ইলেকট্রিক বাসে পরিবর্তন করার সুপারিশ করেছে কমিটি। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ডাঃ সুদীপ্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন ২০ জন বিধায়কের কমিটির এই সংক্রান্ত সুপারিশ বিধানসভায় জমা দিয়েছে।
কেন এমন সুপারিশ করা হল? একদিকে সরকারি বাসের উপর রাজ্য সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাই সেই বাসগুলিকে ইলেকট্রিক বাসে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। তাছাড়া এই কমিটি মনে করছে, এটা করলে দুটি কাজ হবে। এক, পেট্রল এবং ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। দুই, পরিবেশ দূষণ কমবে। তবে বেসরকারি বাসগুলির ভাড়া নিয়েও ভাবতে হবে। কারণ যাত্রীদের অভিযোগ, বেসরকারি বাস বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। আবার এই কমিটির রিপোর্টেই বলা হয়েছে, সরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলির আর্থিক অবস্থা খারাপ। আবার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। তাই বাস চালানোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু আয় বাড়ছে না। তাই সরকারি বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করা উচিত।
ইলেকট্রিক বাসে জোর কেন? পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা (ডব্লুবিটিসি) ২০১৯ সালে প্রথম ইলেকট্রিক বাস নিয়ে আসে শহরে। প্রথমে ২০টি বাস আনা হয়েছিল। পরে আরও ৮০টির মতো বাস নিয়ে আসা হয়। ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক বাস চার্জ দিয়ে তা চালানো হয়। এই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসগুলি এখন শহরের নানা রুটে চলছে। তার জন্য পরিবহণ সংস্থার বিভিন্ন ডিপোয় চার্জিং ব্যবস্থার পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। আর এই ইলেকট্রিক বাসগুলি চালানোর খরচ অনেক কম। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত নয় ডিজেল চালিত বাস চালাতে এখন প্রতি কিমি খরচ ৩৫ টাকা। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ডিজেল চালিত বাসে প্রতি কিমি খরচ ৫০ টাকা। সেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রিক বাস প্রতি কিমির খরচ মাত্র ১২ টাকা। তাই এই বাসের সুপারিশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবশেষে অন্তর্বর্তী উপাচার্য পেল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নিয়োগ করলেন রাজ্যপালই
আর কী জানা যাচ্ছে? রাজ্য সরকার ইলেকট্রিক বাস পেতে একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এবার সেখান থেকে ১১০০ ইলেকট্রিক বাস নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তার ফলে শুধু শহরে নয়, গ্রামবাংলার বিভিন্ন রুটেও চলবে ইলেকট্রিক বাস। তাতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে আর্থিক চাপও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বাস চালানোর খরচ অনেক কম হওয়ায় আর্থিক সুবিধা হচ্ছে পরিবহণ সংস্থার। বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি সরকারি বাসের রক্ষণাবেক্ষণের উপরও জোর দিয়েছে। যাতে যাত্রীদের অসুবিধা না হয়।