একেবারে চেনা ছকে খেলা। একাধিক প্রকল্পের বকেয়ার দাবিতে আজ, শুক্রবার থেকে ধরনায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সবার চোখ রেড রোডের মঞ্চে। আর ঠিক তখনই নরেন্দ্র মোদীর সরকারের থেকে মিলল টাকা। জল জীবন মিশনে রাজ্যকে বড় অঙ্কের কয়েক কোটি টাকা দিল কেন্দ্রীয় সরকার। আজ কালো শাড়ি পরে ধরনায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সঙ্গে সঙ্গেই আসে টাকা। তবে এটা একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার বকেয়া টাকা নয়। এটা অন্য খাতের টাকা পাঠানো হয়েছে। এটা কি কাকতালীয়? উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে রাজ্যের নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে এটা একেবারেই কাকতালীয় নয়। এই টাকা দিয়ে আসলে রাজ্য সরকারকে চাপে রাখতে চাইল কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ যে প্রকল্পের জন্য টাকাটা দেওয়া হচ্ছে সেটা ৫০:৫০ অনুপাতে বিভক্ত। সুতরাং ততটা টাকাই দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। অথচ দেখানো গেল, ভারত সরকার টাকা পাঠিয়েছে। এই সুন্দর কৌশলেই খেলে দিল কেন্দ্র। যা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পেরেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্যরা। কেন্দ্রীয় সরকার এবার যে অর্থ বরাদ্দ করেছে সেটা অবশ্য বাংলার বকেয়া পাওনা নয়।
অন্যদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী থাকাকালীন বাংলার প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প নেন। কলকাতায় যে সুবিধা আছে সেটা কিন্তু জেলায় নেই। তাই নলকূপের জল এখনও পানীয় হিসাবে মানুষজন ব্যবহার করেন। যদিও বাংলায় আর্সেনিকের সমস্যা প্রবল। তাই নদীর বা হ্রদের জল তথা সারফেস ওয়াটার পরিস্রুত করে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করার যোজনা নেওয়া হয়। এই প্রকল্পে সাহায্যের জন্য ইউপিএ সরকারের জমানা থেকেই একটি যোজনা ছিল। তার নাম জাতীয় রুরাল ড্রিঙ্কিং ওয়াটার মিশন। এটাই নরেন্দ্র মোদী জমানায় নতুন নামকরণের মাধ্যমে হয়েছে জল জীবন মিশন। এবার এই প্রকল্পের খাতে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোরগোল, শিক্ষিকারা ঘেরাও করলেন অর্থ আধিকারিককে
এছাড়া আজ, শুক্রবার সেই প্রকল্প খাতে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক বাংলার জন্য ৯৫১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। যা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। তবে এই টাকা পাঠানোর নেপথ্যে আছে বিরাট অভিসন্ধি। যাতে রাজ্যের উপর চাপ বাড়ানো হয়েছে। জলশক্তি মিশনের আওতায় কেন্দ্র–রাজ্য অংশীদারিত্বের অনুপাত হল ৫০:৫০। সুতরাং রাজ্য সরকারকেও এই প্রকল্প খাতে ৯৫১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। এটা বাড়তি চাপ। জল জীবন মিশন খাতে কেন্দ্র টাকা রিলিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারকেও একই পরিমাণ টাকা এসক্রো অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে। চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, এই টাকা কোনওভাবেই অন্য খাতে ঘোরানো যাবে না।