বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এবার অসন্তোষ প্রকাশ খোদ পুলিশমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এমনকী পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ঠেকাতে 'দুর্নীতি বিরোধী সেল' গঠনের কথাও জানিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশের একাংশ অন্যায় দেখেও চোখ বন্ধ করে রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যের একাধিক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। আঙুল উঠেছে মমতার দিকেও। কারণ তিনি নিজেই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। এই আবহে মমতা নিজেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন।
গত রবিবার দত্তপুকুরের বিস্ফোরণ নিয়ে তোলপার রাজ্য রাজনীতি। এই আবহে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেন, 'অনেকেই বেআইনি কাজ করছে। আর সবাই না হলেও পুলিশের একাংশ চোখ বন্ধ করে রয়েছে। তাই অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটির মতো একটি অ্যান্টি করাপশন সেল গঠন করেছি আমি।' পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে গতকাল মমতা বলেন, 'কেউ যদি রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় আইন ভাঙেন, তাহলে নিশ্চয় জরিমানা করা উচিত। তবে কোনও ক্ষেত্রে যদি আইন না থাকে, তাহলে জরিমানা করে সেই টাকা নিজেদের পকেটে কেন ভরবেন? আমি সবকিছুর ওপরেই লক্ষ্য রাখছি। কে কী করছে, সবই দেখছি।'
এদিকে দত্তপুকুরের বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে মমতা এদিন বলেন, 'গ্রিন বাজি তৈরির বিষয়ে বলেছিলাম আমরা। সবুজ বাজি তৈরি রুন আপনারা। তাতে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। আয় হয়ত এতে কিছুটা কমবে। তবে প্রাণ তো বাঁচবে।' উল্লেখ্য, দত্তপুকুরের ঘটনায় স্থানীয়দের আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকেই। অনেকেরই অভিযোগ, সেখানে বেআইনি বাজি তৈরির কাজ চলত। পুলিশ এসবই জানত বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এই আবহে বিরোধীরা একযোগে এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত অনেকের।
এদিকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেআইনি ইটভাটা চালানো, বালি বা পাথর চুরির ক্ষেত্রে আগে রাজ্যে কোনও আইন ছিল না। তবে এখন এই সব বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে আইন করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তাই পুলিশের উচিত এই সব ক্ষেত্রে কঠোর হওয়া। অপরদিকে পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে বিরোধীদের আক্রমণেরই জবাব দেন মমতা। তাঁর কথায়, বাংলায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান অনেকেই। একই ভাবে অনেক শ্রমিক কাজের খোঁজে অন্য রাজ্যে যান। মমতার এই ক্ষেত্রে অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ বা মিজোরামের মতো এনডিএ শাসিত রাজ্যে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা।