মঙ্গলবার টুইটে ভিডিও পোস্ট করে এবার পাগড়ি বিতর্কে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন দিল্লি শিখ গুরুদোয়ারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মনজিন্দর সিং সিরসা। তাঁর কাছে এ ঘটনায় নিরপেক্ষ এবং দ্রুত তদন্তের দাবি জানান শিখ সম্প্রদায়ের ওই শীর্ষ ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃত্ব।
সেই সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে এদিন ভিডিও বার্তায় রাজ্যপাল বলেন, ‘সেদিন মনজিন্দর সিং সিরসা আমার সঙ্গে দেখা করলে আমার জালিওয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে হওয়া সেই ঘটনার প্রতিবাদে নিজের ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি শিখদের সেদিনের দুঃখ বুঝতে পেরেছিলেন।’
বিজেপি–র ‘নবান্ন চলো’ অভিযানে বলবিন্দর সিংয়ের পাগড়ি খুলে যাওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে রবিবার টুইট করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। জানানো হয়, এ রাজ্যে শান্তিতে রয়েছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। সেদিন পাগড়ি খুলে যাওয়ার ঘটনা ইচ্ছাকৃত নয়। যা করা হয়েছে আইনত করা হয়েছে। সেই টুইটের কথা উল্লেখ করে রাজ্যপাল এদিন ১ মিনিটের ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র দফতরের টুইট যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে। আমার মতে, এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র দফতর বা পুলিশের বিরোধীর মতো আচরণ করা উচিত নয়। কাটা ঘায়ে নুন নয়, তাদের মলম লাগানো উচিত।’
এদিন রাজ্য সরকারের কাছে এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত চেয়ে আবেদন জানান রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘এই মামলা বেশিদিন চলা একেবারেই উচিত নয়। ওই যুবকের সঙ্গে যা হয়েছে, একেবারে ঠিক হয়নি।’ নিজের গা বাঁচানোর চেষ্টা না করে রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের উচিত নিজেদের ভুল সংশোধন করা, মত প্রকাশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
বিজেপি–র ‘নবান্ন চলো’ অভিযানের দিন হাওড়া ময়দান থেকে বলবিন্দর সিংয়ের কাছ থেকে একটি অনুমোদনহীন আগ্নেয়াস্ত্র পায় পুলিশ। তার পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সে ব্যাপারে এদিন টুইটে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, সেদিনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত করা হয়েছে বলবিন্দরকে। হাওড়া থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, অস্ত্র আইন–সহ মোট ১৬টি ধারায় মামলা করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এতে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে। যা অত্যন্ত আপত্তিজনক। রাজ্যপালের মতে, এই ঘটনার মীমাংসা করে রাজ্যে মানবাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা উচিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।