আবার সক্রিয় হয়ে উঠলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। ফের তিনি ‘না’ বলে দিলেন সমাবর্তনের ক্ষেত্রে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আগে যা ঘটেছিল এবার সেটাই ঘটল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও। সরাসরি সমাবর্তন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ এসেছে রাজভবনের পক্ষ থেকে। এই ঘটনা নিয়ে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তা নিয়ে বিস্তর চর্চাও শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। সুতরাং সমাবর্তন নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হল। কেন সমাবর্তনের ক্ষেত্রে আচার্য অনুমতি দিচ্ছেন না? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে আগামী ২৭ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিল। সেদিনই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ডিগ্রি বিতরণের কথাও ছিল। কিন্তু এই নির্দেশ আসার পরে সব ভেস্তে গেল। রাজভবনের নির্দেশে আপাতত সমাবর্তন স্থগিত হয়ে গেল। এখনও এই বিষয়ে রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতর কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। তাই পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। গত ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ঠিক একদিন আগে সন্ধ্যায় তৎকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার জেরে সমাবর্তন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু দেখা যায়, আচার্যের নির্দেশ উপেক্ষা করেই সমাবর্তন হয়।
আরও পড়ুন: ‘মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘেরাও করুন’, এসএসসি কাণ্ডে সুর চড়ালেন শুভেন্দু
অন্যদিকে সেই জল অনেক দূর গড়িয়েছিল। যদিও অবশেষে বুদ্ধদেব সাউ এখন অতীত হয়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য এসেছেন। এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একইরকম পরিস্থিতি তৈরি হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। কারণ ছাত্রছাত্রীরা এই সমাবর্তন হোক সেটাই চায়। সেই বার্তা উপাচার্যকে জানিয়েও দিয়েছেন। কেন এই সমাবর্তন স্থগিত? তার কোনও নির্দিষ্ট কারণ রাজভবন থেকে জানানো হয়নি। দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব ২৬ এপ্রিল মিটবে। তারপরই সমাবর্তন করতে চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং অসুবিধা কোথায়? এই প্রশ্নই তুলছে বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে রাজভবনে জমে থাকা বিল ছেড়ে দিতে। তার উপর স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে সব কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। সুতরাং রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতের আবহ বিদ্যমান। আর তার মধ্যেই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ২৭ এপ্রিল ডিগ্রি হাতে পেতেন পড়ুয়ারা। যা হবে কিনা সন্দেহ। রাজভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে লোকসভা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমাবর্তন করা যাবে না বলে সূত্রের খবর। তাই স্থগিত করা হয়েছে সমাবর্তন। এটা কি রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতের বহিঃপ্রকাশ? উঠছে প্রশ্ন।