দেশ জুড়ে বাড়ছে ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ। ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলির সংগঠন মাইক্রোফিন্যান্স ইন্সটিটিউশন নেটওয়ার্কের তথ্য এমনটাই বলছে। যার মধ্যে ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গে। গ্রামেগঞ্জে বা প্রত্যন্ত এলাকায় পর্যাপ্ত ব্যাঙ্ক পরিষেবা না থাকার ক্ষুদ্রঋণের চাহিদা বেশি বলে মনে করছে ওই সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গের পর ক্ষুদ্র ঋণের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কেরল।
ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মাথাপিছু গড় ঋণ ৫৩,৭০৪ টাকা যা রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম। এরপর কেরলে এই সংখ্যাটা হল ৪৬,০৭৪ টাকা। দেশে ক্ষুদ্রঋণের চাহিদা কেন বেড়েছে তা নিয়ে মূলত কয়েকটি কারণকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা ভিএফএস ক্যাপিটালসের এমডি-সিইও কুলদীপ মাইতি মনে করেন, গ্রামেগঞ্জে অধিকাংশ জায়গাতেই ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সেরকমভাবে নেই। তাছাড়া যেখানে ব্যাঙ্ক রয়েছে সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক রকম শর্ত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। সবসময় মানুষের পক্ষে সেই শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় না। তাই স্বল্প ঋণের জন্য ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলির কাছে যাচ্ছেন মানুষজন। আবার বেকারত্বের কারণেও ক্ষুদ্রঋণ বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। গত দু'বছর কোভিডের কারণে অনেক মানুষের কাজ চলে গিয়েছে। ফলে অনেকেই চাইছেন নিজের কোনও ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করতে বা কোনও কাজ করতে। কিন্তু পুঁজির অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাঙ্কের শর্ত পূরণ করে ঋণ শোধ করাও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই কারণে ক্ষুদ্রঋণের উপরেই ভরসা করছেন বেকার যুবক যুবতীরা।
ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে বকেয়া ঋণ আদায়। এ বিষয়ে মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশন নেটওয়ার্কসের সিইও এবং ডিরেক্টর অলোক মিশ্র জানান, গত অর্থবছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকেই ক্ষুদ্র ঋণের পরিমাণ বাড়ছে চতুর্থ ত্রৈমাসিক থেকে তা আরও বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে বাড়ছে বকেয়া ঋণ আদায়। যদিও বর্তমানে ঋণ শোধের গতি বেড়েছে বলেই দাবি করেছেন কুলদীপ বাবু। তিনি জানান, লকডাউন শেষের দিকে ঋণ আদায় নেমে গিয়েছিল ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশে। এখন তা বেড়ে ৯৬ থেকে ৯৭ শতাংশে পৌঁছেছে।