পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিই ভবিষ্যত। বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতে এছাড়া উপায় নেই। আর সেই লক্ষ্য পূরণেই এবার এর নতুন 'ডিকার্বনাইজেশন নীতি' আনতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সবুজ শক্তির উৎপাদন এবং স্টোরেজ ব্যবস্থায় এক আমূল পরিবর্তনের ভাবনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত। ঠিক কীভাবে সবুজে পথে রাজ্য হাঁটবে, সেই রোডম্যাপেরই আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা।
বেঙ্গল চেম্বার এবং ব্রিটেন সরকারের আয়োজিত 'নেট জিরো পাথওয়েস ফর স্টেটস অ্যান্ড বিজনেসেস কনক্লেভে' যোগ দেন রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব এস সুরেশ কুমার। সেই অনুষ্ঠানেই সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'বর্তমানে যে নীতির খসড়া তৈরি করা হচ্ছে, তাতে শক্তি সঞ্চয়ের উপর বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে।'
এই লক্ষ্য পূরণে ৯০০ মেগাওয়াটের পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজের সঙ্গে রাজ্য একটি ১,০০০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য টেন্ডার তৈরি করেছে। আনুমানিক খরচ প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা। এর অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশানাল কো-অপারেশন এজেন্সি। এমনটাই জানালেন বিদ্যুত্ সচিব।
এদিনের অনুষ্ঠানে মূল বৈঠকের বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ির ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কী কী করা যায়, তার পর্যালোচনা। নেট-জিরো কার্বন এমিশনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভারতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রসারের মাধ্যমে পরিবহণ সেক্টরকে ডিকার্বনাইজ করার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটেনের সরকার ইভি-র ক্ষেত্রে অর্থায়ন এবং সহজে পেট্রোলচালিত গাড়ি থেকে ইলেকট্রিকের দিকে স্থানান্তরের বিষয়ে সহায়তা করছে।
একইভাবে, আগামী সাত বছরের একটি লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। তার মধ্যেই বিদ্যুত্ উত্পাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা DVC-র। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই উত্পাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করে ফেলবে তারা। এর জন্য তাপবিদ্যুত্ ও জলবিদ্যুতের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুতেও জোর দেবে DVC। ডিভিসি বর্তমানে প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করে। ২০৩০ সাল নাগাদ তা বাড়িয়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে যেতে চাইছে তারা। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে বিশ্ব সবুজ শক্তির দিকে এগোচ্ছে। আর সেই বিষয়টি মাথায় রেখে সৌরবিদ্যুতকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শুধুমাত্র সৌরবিদ্যুত প্রকল্পের মাধ্যমেই ২,৫০০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন DVC কর্তারা।