কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ফি কাঠামো পুনর্গঠন করছে না বেসরকারি স্কুলগুলি। এই অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে এবার স্মারকলিপি জমা দিচ্ছে বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আগামী ২৭ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে তাঁরা স্মারকলিপি জমা দেবেন। সেই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করারও অনুরোধ করবেন তাঁরা।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ রাজ্যের স্কুল। অভিভাবকদের অভিযোগ ছিল, করোনার মধ্যেও বেসরকারি স্কুলগুলি কয়েকটি পরিষেবার জন্য ফি নিচ্ছেন। যা এখন শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না। এই অভিযোগ করে হাইকোর্টে মামলাও করেন এক অভিভাবক। গত ১৩ অক্টোবর বেসরকারি স্কুলের ফি কাঠামো পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
অভিভাবকদের সংগঠনটির অভিযোগ, কিন্তু অনেক বেসরকারি স্কুলই হাইকোর্টের রায় ঠিক মতো মানছে না। সুপ্রিয়বাবু বলেন, 'হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে স্কুলগুলি নন এসেনশিয়াল ফি নিতে পারবে না। কিন্তু এসেনশিয়াল ফি-র নাম করে নন এসেনশিয়াল ফি নিচ্ছে স্কুলগুলি।' সুপ্রিয়বাবুর দাবি, স্কুল না খোলা পর্যন্ত সব পড়ুয়ার ২০ শতাংশ ছাড় পাওয়ার কথা। যাঁরা তারও বেশি ছাড় চান, সেই সব অভিভাবকদেরই স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার কথা। অথচ অনেক স্কুল ছাড়ের জন্য সব অভিভাবকদেরই চিঠি দিতে বলছে।
এমনকী কত দিনের মধ্যে তা দিতে হবে, সেই নির্দিষ্ট সময়ও বলে দেওয়া হচ্ছে। এক অভিভাবক বলেন, 'করোনা পরিস্থিতির কারণে বহু অভিভাবকেরই বেতন কমে গিয়েছে। অনেকের চাকরি নেই। এই অবস্থায় স্কুলগুলি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছে না। এ রকম চলতে থাকলে মাঝপথে ছেলেমেয়েদের স্কুল ছাড়াতে বাধ্য হবেন অনেক বাবা-মা।'
বেসরকারি স্কুলগুলি অবশ্য অভিভাবকদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ। সম্প্রতি ICSE, CBSE অনুমোদিত বেসরকারি স্কুলগুলি একটি নতুন সংগঠন তৈরি করেছে। সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, সব বেসরকারি স্কুলই হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ফি পুনর্গঠন করেছে। কিছু স্কুলের অভিযোগ, অনেক অভিভাবকই কোনও ফি দিচ্ছেন না।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য স্কুল ফর দ্য আইএসসি’–র সর্বভারতীয় সভাপতি সুজয় বিশ্বাস বলেন, 'অনেক স্কুলেরই অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়েছে। স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে এমনকী শিক্ষকদের বেতন দিতেও বহু ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে।'