বাংলা নিউজ > কর্মখালি > Jadavpur Row: ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং নয়, চলছে অ্যান্টি-যাদবপুর ক্যাম্পেন, গরিব পড়ুয়াদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে না?'

Jadavpur Row: ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং নয়, চলছে অ্যান্টি-যাদবপুর ক্যাম্পেন, গরিব পড়ুয়াদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে না?'

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মুখ খুললেন অধ্যাপক সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়। (গ্রাফিক্স সুমন রায়)

Jadavpur Row: প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বিরোধী হাওয়া উঠেছে। র‌্যাগিংয়ের অভিযোগের মধ্যেই ‘নিশানা’ করা হচ্ছে যাদবপুরকে। সেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়।

দীর্ঘদিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শয়ে-শয়ে এমন পড়ুয়া ‘পাস-আউট’ করেছেন, যাঁরা বিশ্বের মঞ্চে ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গের নাম উজ্জ্বল করেছেন। কিন্তু একটি নৃশংস ঘটনার পর সার্বিকভাবে সেই বিশ্ববিদ্যালয়কেই যেভাবে নিশানা করা হচ্ছে, যেভাবে ‘অ্যাটাক’ করা হচ্ছে, সেটা একেবারেই কাম্য নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার কোনও কোনও অজুহাত থাকতে পারে না। যে বা যাঁরা দোষী, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। কীভাবে র‌্যাগিংয়ের মতো মানসিক বিকৃতিতে ইতি টানা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। অথচ সেইসব ছাপিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া এবং মেনস্ট্রিম মিডিয়ার একটি অংশে ‘অ্যান্টি-যাদবপুর’ ক্যাম্পেন চলছে। ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং’-র পরিবর্তে ওই অংশের ক্যাম্পেনের মূল ‘ফোকাস’ হয়ে গিয়েছে ‘অ্যান্টি-যাদবপুর’। সবকিছুকে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই ঘটনা নিয়ে যে আলোচনা করা যাবে না, সেটা বলছি না। নিশ্চয়ই মিডিয়ায় আলোচনা হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হবে। আলোচনা হওয়াও উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কোথাও এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। কিন্তু যাদবপুরের সবকিছু খারাপ বলে যে একটা হাওয়া তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বা একটা ‘ন্যারেটিভ’ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটা একটা ভয়ংকর বিষয়। কারণ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যা অর্জন করেছে, সেটা তো মুছে ফেলা যায় না। এটা মনে রাখতে হবে যে পৃথিবীর সব ভালো অর্জন করে উঠতে পারেনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর সব ভালো কাজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে, এরকম কেউ দাবিও করেনি। তবে এরকম একটা নৃশংস ঘটনার জন্য যাদবপুর যা যা অর্জন করেছে, যাদবপুরে যা যা ভালো হয়েছে, সেটা কখনওই মুছে ফেলা যায় না। বরং একটি গুরুতর বিষয়ের অংশবিশেষ তুলে ধরে আদতে পুরো বিষয়টা লঘু করে দেওয়া হচ্ছে।

আসলে আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়া বা মিডিয়ার অংশবিশেষ যেন ‘বাইনারি’ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ‘হ্যাঁ’ হবে, নাহলে ‘না’ হবে। ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-র মধ্যেও যে একটা অসীম জায়গা (হয়ত মহাকাশ) আছে, সেটা ভুলে গিয়েছে মিডিয়া। আর সেই বহুত্ববাদের জায়গাটা যদি আমরা ভুলে যাই, তাহলে একটি ক্ষুদ্র সীমানার মধ্যে আটকে পড়তে হবে। যেটা আদতে সমাজের পক্ষেই মঙ্গলজনক নয়। তাতে হয়ত চটজলদি কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে। কিন্তু সমস্যার মূলে পৌঁছানো যাবে না। ফলে কয়েকদিনের জন্য ওই সমস্যাকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যাবে। কয়েকদিন পরে আবারও সেই সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সেভাবেই পুরো বিষয়টা চলতেই থাকবে।

আর সেই প্রবণতার কারণেই আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক পুরোপুরি উপেক্ষা করে যাচ্ছি। আর সেই সমস্যাটা শুধু যাদবপুরের নয়, রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সমস্যা আছে। ঠিকমতো শিক্ষকপদ পূরণ হচ্ছে না। আমি হলফ করে বলতে পারি যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ অশিক্ষক কর্মচারীর পদ ফাঁকা আছে। সেই শূন্যপদ পূরণের জন্য প্রশাসন বা রাজ্য সরকারের যেরকম তৎপরতা প্রয়োজন, সেরকম হচ্ছে না। যাদবপুরের শিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে যেরকম ‘ফান্ড ক্রাইসিস’ চলছে, সেটা একটা ভয়ানক ব্যাপার। পর্যাপ্ত টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বাজেট কাটছাঁট করা হচ্ছে। এটা সবাই জানেন যে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে দেশের মধ্যে একটা উৎকর্ষের কেন্দ্র হতে পারল না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং এই বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা করতে হবে।

এখন সিসিটিভি বসানো নিয়ে আলোচনা চলছে। যাদবপুরের সর্বত্র যে সিসিটিভি নেই, সেরকম নয়। অপ্রতুল আছে - যতগুলি প্রয়োজন, ততগুলি নেই। ধরা যাক, যেখানে যেখানে সিসিটিভি নেই, সেখানেও সিসিটিভি বসল। কিন্তু নজরদারির কাজটা কারা করবেন? শুধুমাত্র সিসিটিভি লাগানো থাকল, তাতেই তো নজরদারির কাজ শেষ হয়ে যাবে না। কী ঘটনা ঘটছে, তা সঙ্গে-সঙ্গে দেখার জন্য তো লোক দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। প্রচুর পদ ফাঁকা পড়ে আছে। চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে তাঁদের কাজ চালানো হচ্ছে। তাঁদের বেতন দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। তাঁদের বেতন দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

অর্থাৎ যে বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র খরচে পড়া যায়, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর দুঃস্থ-গরিব ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি নিজের দায়িত্ব পালন করছে না ‘রাষ্ট্র’। শুধু তাই নয়, রাজ্যের প্রধানের থেকেও একাধিক দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। আর কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ মাধ্যমের ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে এটা বলতে পারি যে সেই পরিস্থিতিতে সংকট আরও বাড়ে। আরও ঘনীভূত হয় ‘ক্রাইসিস’। সেই সংকট যাতে আরও না বাড়ে, সেজন্য সকলকে হাতে-হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। করতে হবে একাধিক দৃঢ়চেতা পদক্ষেপ।

প্রথমত, রাজ্যের সম্মানের জন্য, দেশের সম্মানের জন্য আমাদের এই নিকৃষ্ট কাজের (র‌্যাগিং) জন্য উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে। কঠোর শাস্তির বিধান থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন করে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে হবে। তৃতীয়ত, ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং’-র পরিবর্তে ‘অ্যান্টি-যাদবপুর’ ক্যাম্পেন বন্ধ করতে হবে। নাহলে প্রচুর গরিব পড়ুয়ার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। ধরা যাক, একজন পড়ুয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা গণমাধ্যম নিয়ে পড়ছেন। তাঁর বাবা সবজি বিক্রি করেন। অর্থাৎ ওই পড়ুয়ার আগের প্রজন্মের আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই। এবার সেই পড়ুয়াকে যদি ‘অ্যান্টি-যাদবপুর’ ক্যাম্পেনে প্রভাবিত হয়ে যাদবপুর ছেড়ে প্রচুর টাকা খরচ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে হয়, তাহলে তো তাঁর পড়াশোনাই বন্ধ হয়ে যাবে। যাঁরা শুধুমাত্র ‘অ্যান্টি-যাদবপুর’ ক্যাম্পেন চালাচ্ছেন, তাঁদের একবার ভেবে দেখা উচিত যে এরকম ক্যাম্পেন চালিয়ে আদতে আর্থিকভাবে দুর্বল প্রচুর মেধাবী পড়ুয়াদের সঙ্গে আমরা কি বিশ্বাসঘাতকতা করছি না?

উত্তরটা নিশ্চয়ই তাঁরা খুঁজে পাবেন। আর সবশেষে একটা কথা বলতে চাই। শুধুমাত্র কঠোর শাস্তি দিলেই র‌্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় ইতি টানা যাবে না। র‌্যাগিং একধরনের মানসিক বিকার। তাই কঠোর শাস্তির পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে। সচেতন করতে হবে সকলকে। সেই বিষয়টা অত্যন্ত জরুরি। সেই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কয়েকটি বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। যে পড়ুয়ারা এবার ভরতি হয়েছে বা যাঁরা পুরনো পড়ুয়া আছেন, তাঁদের মনের কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে। করা হবে কাউন্সেলিং। পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের মধ্যে নতুন করে একটা সাঁকো তৈরি করার পরিকল্পনাও চলছে। প্রয়োজনে পড়ুয়াদের জীবনের দুই 'অভিভাবক' - বাবা-মা এবং শিক্ষকদের মধ্যে নিয়মিত মিটিং করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখকের মতামত ব্যক্তিগত, তা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার মতামত নয়)

কর্মখালি খবর

Latest News

সাই পল্লবী-র পর এবার বড়পর্দায় 'সীতা' হচ্ছেন 'কাঁচা বাদাম গার্ল', অঞ্জলি বলছেন.. মহেন্দ্র সিং ধোনি যে আইপিএলে গোল্ডেন ডাক করেন, চেন্নাইয়ের পারফরমেন্স ভালো হয় ‘‌দেখবেন বীরভূমের ভোট হয়ে যাবে, কেষ্টও ছাড়া পেয়ে যাবে’‌, অনুব্রতর প্রশংসায় মমতা লাইসেন্সহীন মেশিনে ৭ বছর ধরে দেওয়া হচ্ছে ভুয়ো USG রিপোর্ট, হাতেনাতে ধরলেন লকেট পুংকা শাক জানেন? সাঁতার কাটতাম, ধান কাটতাম…, বীরভূমে গিয়েই শৈশবে ফিরলেন মমতা আইপিএলে চতুর্থবার গোল্ডেন ডাক ধোনির, হার্ষালের বলে আউট, ভিডিয়ো মুস্তাফিজুর, চাহারের পর ফের বড় ধাক্কা খেল CSK, দেশে ফিরে গেলেন লঙ্কান পেসারও সিকিমে আসছে বন্দে ভারত! ৫ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন গুয়াহাটি? ‘আমি খুব স্বার্থপর হয়ত, তাই মায়ের উপর…’ রচনার সামনে একী বললেন মেয়ে! ‘‌বাংলার মা–বোনেদের আত্মসম্মান নিয়ে খেলবেন না’‌, সন্দেশখালি ইস্যুতে তোপ মমতার

Latest IPL News

আইপিএলে চতুর্থবার গোল্ডেন ডাক ধোনির, হার্ষালের বলে আউট, ভিডিয়ো IPL- দুরন্ত বলে বিরাটকে করেছিলেন আউট, সেই নূরকেই ম্যাচের পর উপহার ‘দাদা’ কোহলির ‘এসব দলের বিরুদ্ধে খেলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখা উচিত নয়’, বিস্ফোরক শাকিব আল হাসান ৩৫ বছর বয়সেও এমন ফিল্ডিং, নিখুত থ্রো! কোহলিকে দেখে গ্রিনও অবাক হয়ে গেলেন IPL 2024- লাস্ট বয়ের কাছে হেরে ৯ নম্বরে দল, কি সাফাই দিলেন গুজরাট অধিনায়ক শুভমন? সামনে WC,তাই অসুস্থতা উপেক্ষা করে খেলেছেন ম্যাচ,সেরার পুরস্কার পেয়ে বললেন সিরাজ পার্পেল ক্যাপ জিতে মেয়েকে নিলেন কোলে,সোমবার ফের ক্যাপ পুনর্দখল করতে মরিয়া নটরাজন IPL 2024: T20 তে বড় রেকর্ড গড়লেন SA-র ডু প্লেসি, গেইলকে পিছনে ফেলল RCB-র ফ্যাফ হঠাৎই Undertaker-এর ভূমিকায় কেকেআর ক্রিকেটার, মারলেন চোকস্লাম, দেখুন ভিডিয়ো ভক্তদের ভিড়ে আটকে পড়লেন এনরিখ ক্লাসেন! হঠাৎ রেগে গেলেন SRH-এর তারকা ক্রিকেটার

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.