বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ঢাকতে বলির পাঁঠা করা হয়েছিল বাবর আজমকে। তিন ফর্ম্যাটেই বাবরকে পাকিস্তানের নেতৃত্ব ছাড়তে বাধ্য করেছিল পিসিবি। তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে, সেটা বিবেচনা করে দেখেনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। মাত্র সাড়ে চার মাস পরেই টনক নড়ে পাক বোর্ডের। ফলে ফের ‘পায়ে ধরে’ নেতৃত্বে ফেরাতে হয় বাবর আজমকে।
২০২৩-এর ১৫ নভেম্বর তৎকালীন পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফের সঙ্গে বৈঠকের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন বাবর আজম। ২০২৪-এর ৩১ মার্চ বাবরকে ফের সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্বে ফেরায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। বর্তমান পিসিবি প্রধান মহসিনের সঙ্গে বৈঠকের পরেই ক্যাপ্টেন্সি ফিরে পান বাবর। আপাতত শুধু টি-২০ ও ওয়ান ডে-র নেতৃত্বে ফিরলেও বাবরের টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি ফিরে পাওয়াও কেবল সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
বিচক্ষণ বাবর পরিস্থিতির সুবিধা নিতে পিছপা হবেন না নিশ্চিত। তিনি যে তিন ফর্ম্যাটেই নেতৃত্ব ফিরে পেতে চান, সেই ইঙ্গিত মিলেছে আগেই। তাছাড়া শান মাসুদ টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি হাতে নিয়ে ব্যক্তিগত পারফর্ম্যান্সে নজর কেড়েছেন বটে, তবে তাঁর নেতৃত্বে অজি সফরের টেস্ট সিরিজে ভরাডুবির মুখো পড়ে পাকিস্তান। তাই ফের বাবরের হাতেই যে পাকিস্তানের টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি উঠতে চলেছে, সেটাও কার্যত নিশ্চিত।
বাবর আজম পাকিস্তানের নেতৃত্ব ছাড়ার পরে পাকিস্তান সাকুল্যে ৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামে। তারা ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়। পরে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৫ ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে হেরে যায়। অর্থাৎ, এই ৮টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১টি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখে পাকিস্তান। ব্যর্থতার জন্য বাবরের নেতৃত্ব কেড়ে নিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। নতুন দলনায়কদের অধীনে আরও ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে দল।
টি-২০ বিশ্বকাপের আগে তাই ঘুরে দাঁড়াতে বাবরের হাতেই ব্যাটন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পিসিবি। শাহিন আফ্রিদির প্রথম দফার ক্যাপ্টেন্সি কেরিয়ার শেষ হয় ৫ ম্যাচেই, যার মধ্যে মাত্র ১টিতে তিনি জয়ের মুখ দেখাতে সক্ষম হন দলকে। তার উপর গত পাকিস্তান সুপার লিগে শাহিনের নেতৃত্বে ১০ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১টিতে জয়ের মুখ দেখে লাহোর। ১টি ম্যাচ ভেস্তে যায়। যে দলনায়ক শেষ ১৫টি টি-২০ ম্যাচে মাত্র ২টিতে জয়ের স্বাদ পান, আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখা মুশকিল। সুতরাং, বাবর আজম কার্যত পিসিবিকে বুঝিয়ে দিলেন যে, দেখ কেমন লাগে!
আরও পড়ুন:- ৯ জন ক্রিকেটার, যাঁরা প্রথম বলেই ছয় মেরে IPL কেরিয়ার শুরু করেন
উল্লেখ্য, বাবরের পরে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়ার উপযুক্ত লোক হিসেবে বিবেচিত হতেন মহম্মদ রিজওয়ান। তিনি পিএসএলেও অত্যন্ত সফল দলনায়ক হিসেবে বিবেচিত হন। তবে বাবরকে সরানোর পরে পিসিবি রিজওয়ানের উপর আস্থা না রেখে শাহিনকে বেছে নেয় নতুন নেতা হিসেবে। যার ফল ভুগতে হয় তাদের।