প্রথম আদিবাসী ক্রিকেটার হিসেবে আসন্ন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগে মাঠে নামতে দেখা যাবে রবিন মিঞ্জকে। আনকোরা ঘরোয়া ক্রিকেটার হলেও গত আইপিএল নিলামে তাঁকে নিয়ে যে রকম টানাটানি দেখা যায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির মধ্যে, তা অবাক করে সকলকে। সিনিয়র ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়নি এখনও। তা সত্ত্বেও ২১ বছরের উইকেটকিপার-ব্যাটারকে দলে নিতে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরত করতে হয় গুজরাট টাইটানসকে।
ব্যাট হাতে আগ্রাসী মেজাজের জন্য পরিচিতমহলে রবিন মিঞ্জকে ডাকা হয় ঝাড়খণ্ডের ক্রিস গেইল হিসেবে। তকমটা যে একেবারে বেমানান নয়, সেটা বোঝা গেল সিকে নাইডু ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালেই। আইপিএল নিলামে দড়ি টানাটানি দেখেই বোঝা গিয়েছিল বাঁ-হাতি ব্যাটারের গুরুত্ব কতটা। রবিন সেটা আরও একবার প্রতিষ্ঠিত করলেন রাজ্যদলের হয়ে মাঠে নেমে।
কর্ণাটকের বিরুদ্ধে সিকে নাইডু ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে রবিন দাপুটে সেঞ্চুরি করেন। দলের বাকিরা তেমন একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেননি কর্ণাটকের বোলারদের বিরুদ্ধে। তবে রবিনকে কার্যত অপ্রতিরোধ্য দেখায়। তিনি ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৮৭ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। রবিন শতরানের গণ্ডি টপকে যান ১০টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৫০ বলে।
যদিও ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেও হাল ছাড়েননি রবিন। বরং লড়াই জারি রাখেন তিনি। কর্ণাটকের ৪০৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ঝাড়খণ্ড শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের প্রথম ইনিংসে ৮৮ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৮৬ রান তোলে। রবিন ১৯২ বলে ১২৭ রান করে ব্যাট অপরাজিত ছিলেন। তিনি ১৩টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন।
কর্ণাটকের হয়ে প্রথম ইনিংসে জোড়া শতরান করেন প্রকার চতুর্বেদী ও ক্যাপ্টেন স্মরণ। প্রকার ১৮টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৫৬ বলে ১৪৭ রান করে আউট হন। স্মরণ ১২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১২৫ বলে ১০৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
উল্লেখ্য, রবিন মিঞ্জের পিতা ফ্রান্সিস খেলাধুলোর সুবাদেই সেনাবাহিনীতে চকরি করতেন। অবসরের পরে তিনি রাঁচির বিরসা মুন্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ফ্রান্সিস মূলত বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল হলের বাহিরপথের দ্বাররক্ষী হিসেবে কর্তব্য পালন করেন। ক'দিন আগে ভারতীয় দল রাঁচিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে আসে। বিমানবন্দরে মিঞ্জের পিতার পাশ দিয়ে শুভমন গিলরা বেরিয়ে গেলেও কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে, তাঁর ছেলে ক'দিন পরে আইপিএলে মাঠে নামতে চলেছেন।