পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার হ্যারিস রউফ কিছুটা আকস্মিক ভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। যার জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। আর এই ঘটনায় এতটাই হেনস্থা হতে হয়েছিল তাঁকে যে, গত বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ভেবে ফেলেছিলেন রউফ। একটি মিডিয়া রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের একটি মিডিয়া আউটলেট থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রউফ সেই সময়ে যে ধরণের প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন, তাতে তিনি গভীর ভাবে হতাশ হয়েছিলেন। তবে, তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়ার পর, তিনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
প্রধান নির্বাচক ওয়াহাব রিয়াজ এবং দলের পরিচালক মহম্মদ হাফিজের সঙ্গে আলোচনার পর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের তিন টেস্টের সিরিজ থেকে রউফ নাম প্রত্যাহার করে নিলে, তাঁকে নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় বয়ে চলে।
রিয়াজ দাবি করেছেন যে, রউফ প্রথমে টেস্ট খেলতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু পরে পিছিয়ে আসেন। তবে ফাস্ট বোলারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে, আরও একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যে, তিনি কখনও-ই সিরিজে খেলার প্রতিশ্রুতি দেননি।
রউফ তাঁর প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে নিজের ফিটনেস এবং ওয়ার্কলোডের বিষয়ে উদ্বেগ উল্লেখ করেছিলেন। ভারতে অনুষ্ঠিত ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের সময়েই তিনি নিজের উদ্বেগের কথা প্রাক্তন প্রধান কোচ মিকি আর্থারের সঙ্গে শেয়ারও করে নিয়েছিলেন। আর্থারের কাছে রউফ জানিয়েছিলেন যে, তাঁর শরীর এত বেশি কাজের চাপ সামলাতে সক্ষম হচ্ছে না। আর্থার তাঁকে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলার জন্য রাজি করানোর প্রচেষ্টা করলেও, রউফ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর সীমিত অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাব্য চোটের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে, সেটা প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন: লারার মতো চারশোর ইনিংস খেললেন কর্ণাটকের তরুণ,ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ছুঁলেন ৭৬ বছর আগের রেকর্ড
দুর্ভাগ্যবশত, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে মাত্র ১৩ ওভার বোলিং করার পরে রউফের চোট হয়েছিল। যে কারণে চোট নিয়ে তাঁর ভয়টা উপলব্ধি করেছিল সকলেই। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বকাপের সময়, ৩০ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার দলকে সতর্ক করেছিলেন। তাঁর ফিটনেস এবং ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বিশ্বকাপে রউফের পারফরম্যান্সও আলোচনার বিষয় ছিল। কারণ তিনি পাকিস্তানের খেলা ন'টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান বিলানো বোলার হিসেবে লজ্জার নজির গড়েছিলেন। তা সত্ত্বেও এটি উল্লেখযোগ্য যে, অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি প্রাথমিক ভাবে তাঁর ফিটনেস এবং ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে তাঁর উদ্বেগ দ্বারা চালিত হয়েছিল।
এটি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে, রউফ সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার কারণে, অবসর নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রিয়জনদের কাছ থেকে সমর্থন এবং পরামর্শ পাওয়ার পরে তিনি সিদ্ধান্ত বদল করেছিলেন।