অধিনায়ক হিসেবে মুম্বই ইন্ডিয়ানস দলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। কিছু করলেও দর্শকরা তাঁকে কটুক্তি করতে ছাড়ছে না। আবার কিছু না করলেও শুনতে হচ্ছে বিদ্রুপ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে এবারের আইপিএলের একটি ম্যাচে টসের সময় সঞ্জয় মঞ্জরেকরকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে শোনা গেছিল, সংযত হওয়ার জন্য। এরই মধ্যে দলের অধিনায়কের পাশে দাঁড়ালেন আরসিবির বিপক্ষে দুরন্ত ইনিংস খেলা ইশান কিষান। ইন্ডিয়ানসের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলছেন, সমর্থকরদের কটুক্তি মোটেই গায়ে মাখেন না তাঁদের অধিনায়ক, বরং উপভোগই করেন।
আরও পড়ুন-IPL 2024-ক্যাপ্টেন্সিতে AI হার মানবে ধোনির কাছে, এখনও ঘোর কাটছে না আগরকরের
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচে অবশ্য হার্দিকের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের পোস্টার বয় বিরাট কোহলিও। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে হার্দিককে নিয়ে বিদ্রুপ শুরু হতেই গ্যালারির দিকে তাকিয়ে তাদের চুপ করতে বলেন বিরাট। বোঝানোর চেষ্টা করেন, হার্দিক ভারতের ক্রিকেটার। সকলের সামনে তাঁর কটুক্তি করা মানে বিদেশীদের সামনে নিজের দেশের ক্রিকেটের গৌরব নষ্ট করা। এরপরই বিরাটের কথা শুনে সমর্থকরা, হার্দিকের নামে স্লোগান দিতে থাকে। ম্যাচে অবশ্য বিরাট কোহলির দল হেরে যায়, সৌজন্যে ইশান কিষান এবং সূর্যকুমার যাদবের দুরন্ত ইনিংস।
আরও পড়ুন-ভাই সেদিন ও যা মেরেছিল…কার তারিফ বারবার গিলের সামনে করেন সিরাজ?
খেলার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেন ইশান। বাকিদের প্রশংসা করার সময়ই উঠে আসে হার্দিক প্রসঙ্গ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি যেটুকু দেখেছিন হার্দিক পান্ডিয়াকে, ও এইসব বিষয়গুলো গায়ে মাখে না। সমর্থকরা কটুক্তি করলেও খুব বেশি তা নিয়ে ভাবিত নন পান্ডিয়া। বরং বিষয়গুলো উপভোগই করে। ও(হার্দিক) জানে দর্শকরা যত কটুক্তি করবে, ভালো খেললে ততটাই বাহবা দেবে। সেই কারণেই ব্যাট হাতে নেমে প্রথম বলেই ওভার বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করে। যাতে দর্শকরা তার পারফরমেন্সে নজর দেয়’।
আরও পড়ুন-‘ওরা তো সব ২৫-৩০ রানের প্লেয়ার’,বিরাটের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা প্রাক্তন নির্বাচকের
অতীতে একটি বিতর্কিত সাক্ষাৎকারের কথাও উল্লেখ করে ইশান বলেন, ‘হার্দিক চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। এটা প্রথম নয়। এর আগেও এরকমই পরিস্থিতিতে ওকে পড়তে হয়েছিল। ফলে বিষয়টা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে। এসব নিয়ে কথা বলতে দেখা যাবে না ওকে(হার্দিক)। কারণ বিষয়গুলোকে অতটাও গুরুত্ব দেয় না। হার্দিক ভালো ভাবেই জানেন, সমর্থকদের আটকানো সম্ভব না। কোনও কিছু পছন্দ না হলে বিদ্রুপ আসবে, সেটা হার্ডওয়ার্ক আর পারফরমেন্স দিয়েই পূরণ করতে হবে। ভালো খেললেই দর্শকরা মাথায় তুলে রাখবে। গোটা দল ওর সঙ্গে আছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিও পাশে রয়েছে’।
অবশ্য ইশান কিশান এতদিন নিজের এবং দলের পারফরমেন্সের জন্যই কিছু বলতে পারেননি বলে মনে করছে নেটিজেনরা। কারণ প্রথম তিন ম্যাচে দল হেরেছে শুধু তাই নয়, বুমরাহকে দিয়ে বোলিং ওপেন না করানোর সিদ্ধান্তও বুমেরাং হয়ে ফিরেছিল। এছাড়া প্রথম ম্যাচেই রোহিতকে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করতে পাঠিয়েও দর্শকদের রোষের মুখে পড়েছিলেন হার্দিক। অবশ্য বহু প্রচলিত একটা প্রবাদ, খারাপ সময় অশান্তি লেগেই থাকে, ভালো সময় তা চাপা পড়ে থাকে। হয়ত দল জেতাই সেই বিতর্ক আপাতত থিতিয়েই পড়বে।