আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথম বার ঘটল ‘টাইমড আউট’-এর ঘটনা। আউটটি আইনসিদ্ধ হলেও এর আগে কখনও কোনও ব্যাটসম্যানকে টাইমড আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি। শুক্রবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টাইমড আউট হয়ে যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেট পড়ার পর কিছুটা দেরিতে মাঠে আসেন শ্রীলঙ্কার তারকা ক্রিকেটার। তার পর হেলমেট সংক্রান্ত কিছু একটা সমস্যার জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, সেটা দু'মিনিট) স্ট্রাইক নিতে পারেননি। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজকে আউট করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: সেমিতে ফের মুখোমুখি হবে রোহিত-বাবররা? এর জন্য অবশ্য মিলতে হবে তিনটি অঙ্ক
‘টাইমড আউট’-র জন্য আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। সেই আবেদন মতো ম্যাথিউজকে আউট দেওয়া হয়। কোনও বল না খেলেই তাঁকে ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে হয় ম্যাথিউজকে। এই আউট নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ‘টাইমড আউট’-র জন্য আবেদন করায় বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিবকে তুলোধোনা করা হচ্ছে। যদিও অনেকে শাকিবের আচরণে কোনও ভুল দেখছেন না। কারণ সেটা ক্রিকেটের নিয়মেই আছে। অর্থাৎ নন-স্ট্রাইকার এন্ডে রান-আউটের মতোও সেই বিষয়টি ক্রিকেটের নিয়মে আছে।
অস্ট্রেলিয়ার উসমান খোয়াজা এক্সে দাবি করেছেন, ‘অ্যাঞ্জেলো ক্রিজে আসার পর হেলমেটের স্ট্র্যাপ ভেঙে যায়। কী ভাবে ও টাইম আউট হয়? যদি ও ওর ক্রিজে এসে ইচ্ছে করে সময় নষ্ট করে, তবে টাইম আউট হতে পারে। কিন্তু এটা হাস্যকর। ব্যাটসম্যান ক্রিজে আসার পর ৩ মিনিট সময় নেন বলের মুখোমুখি হতে।’ গৌতম গম্ভীর আবার বলেছেন, ‘দিল্লিতে আজ যা ঘটল তা খুবই করুণ!’ ডেল স্টেইন আবার বলেছেন, ‘এটা মোটেও ভালো বিষয় হল না।’ এস বদ্রিনাথ আবার বলেছেন, ‘আমি যদি শাকিব হতাম, তবে আমি একজন ক্যাপ্টেন হিসাবে আবেদন করতাম না এবং আমি যদি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ হতাম, তবে আমি হেলমেট ছাড়া আরও বেশি কিছু ভেঙে ফেলতাম।’ প্রাক্তন শ্রীলঙ্কা অলরাউন্ডার রাসেল আর্নল্ড ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে উল্লেখ করেন, ‘এই প্রথম বার আমি এরকম কিছু প্রত্যক্ষ করলাম।’
সোমবার দিল্লিতে অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৫তম ওভারে ঘটনাটি ঘটে। ২৪.২ ওভারে চতুর্থ উইকেট পড়ে শ্রীলঙ্কার। উইকেট নেন শাকিব আল হাসান। তার পর মাঠে নামেন ম্যাথিউজ। সেটা নির্ধারিত সময়ের (খেলার নিয়ম অনুযায়ী, উইকেট পড়ার দু'মিনিটের মধ্যে নয়া ব্যাটারকে প্রথম বলে খেলতে হয়) মধ্যেই ছিল। কিন্তু ক্রিজে এসে তিনি অনুভব করেন যে, হেলমেটে কিছু একটা গড়বড় আছে। সম্ভবত স্ট্র্যাপ ভেঙে গিয়েছিল। ‘গার্ড’ না নিয়েই ডাগ-আউটের দিকে হেলমেট আনতে বলেন।
তারই মধ্যে আম্পায়ারকে কিছু বলতে দেখা যায় শাকিবকে। তার পর অনফিল্ড আম্পায়ারদের সঙ্গে ম্যাথিউজের আলোচনা শুরু হয়। রীতিমতো উত্তেজিত দেখায় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারকে। তিনি বোঝাতে থাকেন যে, হেলমেটের স্ট্র্যাপে সমস্যা ছিল। যদিও আউট দিয়ে দেন আম্পায়াররা। এই পরিস্থিতিতে শাকিবের সঙ্গেও কথা বলতে যান ম্যাথিউজ। শাকিবরা অবশ্য আবেদন ফেরাননি। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয় ম্যাথিউজকে।