সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বঙ্গ–বিজেপি। এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরও বিজেপি নেতারা দাবি করে যাচ্ছেন এটা ভুয়ো। খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন এই ভিডিয়ো শুধু ফেক নয়, ডিপফেক। কিন্তু তাতে অস্বস্তি কমেনি। কারণ ইতিমধ্যেই সন্দেশখালির মহিলারা রাস্তায় বেরিয়ে এসে বলতে শুরু করেছেন, বিজেপি নেতারাই সাদা কাগজে সই করিয়ে জোর করে পুলিশে অভিযোগ জানাতে বলেছিল। ধর্ষণ না হলেও অভিযোগ জমা পড়েছিল ধর্ষণের।
তিনজন মহিলা এবার সরাসরি এই দাবি করেছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তাঁদের সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিশে লেখা ছিল, তাঁরা ধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অথচ ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে মহিলারা নিজে মুখে স্বীকার করছেন। এখন তাঁরা সত্য কথা প্রকাশ্যে নিয়ে আসার জন্য তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন এক বিজেপি নেত্রী বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: জেপি নড্ডা–অমিত মালব্যকে তলব করল কর্নাটক পুলিশ, পাঠানো হয়েছে সমন
এখন এই মহিলারা মিথ্যে মামলার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান বলে জানিয়েছেন। আর যিনি এই কাজ করিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন, সেই বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি দাসের শাস্তি দাবি করেছেন। সন্দেশখালির মহিলাদের সম্ভ্রম নিয়ে ছেলেখেলা করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এখন পালটা অভিযোগ করতে চাইছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপির মহিলা মোর্চার পক্ষ থেকে তাঁদের বাড়িতে এসে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্দেশখালির এক মহিলা দাবি করেছেন, ‘সাদা কাগজে সই করিয়ে ধর্ষণের মামলা সাজিয়েছে বিজেপি। আর এখন মিথ্যা মামলা থেকে সরে আসতে চাইলে মার্ডার করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।’
এছাড়া আর এক অভিযোগকারিণীর কথায়, ‘আমাকে সই করতে বলা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা পাইয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু পরে আমাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যেতে জানতে পারি যে অভিযোগ জমা পড়েছে ধর্ষণের। তখন ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, কোনও ধর্ষণের শিকার আমি হইনি। কোনওদিন রাতে আমাকে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে যেতে হয়নি।’
অন্যান্য মহিলাদের বক্তব্য, ‘এখন বিজেপির পক্ষ থেকে আমাদের বলা হচ্ছে সামাজিক বয়কট করা হবে। একঘরে করে দেওয়া হবে। এখন আমরা আতঙ্কে আছি। পুলিশের সাহায্য চাইছি।’ যদিও জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেছেন, ‘কাউকে জোর করে অভিযোগ করানো হয়নি। থানার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে।’ আর রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘সন্দেশখালির মহিলারা এখন সাহসের সঙ্গে মিথ্যে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাইছে। বিজেপি তাঁদের হুমকি দিচ্ছে।’