২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিরাট কোহলির হাতে পরপর দু'টি ছক্কা হজম করাটা এখনও বোঝহয় ভুলতে পারেননি হ্যারিস রউফ। নানা প্রসঙ্গে সেই কথাটি বারবার তিনি মনে করে ফেলেন। তবে হ্যারিস কিন্তু এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সেরা অস্ত্র। গত কয়েক বছরের মধ্যে তিনি সেরা পাক পেসারদের মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছেন। তাঁর গতির কাচে বারবার পরাস্ত হন বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যাটাররা। তবে এই তারকা পেসারই একটা সময়ে ভারতীয় দলে নেট বোলার ছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে খেলার আগেই, কোহলিকে তিনি নেটে বল করেছেন। বিশ্বকাপের আগে এমনই রহস্য ফাঁস করলেন রউফ নিজে।
প্রসঙ্গত, গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে শেষ ৮ বলে ২৮ রান দরকার ছিল ভারতের। সেই সময়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার রউফ বল করতে এলে, বিরাট তাঁকে পর পর দু’বলে দু'ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে খেলার ছবি বদলে দিয়ে ভারতকে ম্যাচটা জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন বিরাট। পরে রউফ নিজেও কোহলির সেই দুই ছক্কার প্রশংসা বহু বার করেছেন। তবে তিনি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুর অনেক আগেই বিরাটকে কাছ থেকে দেখার এবং তাঁকে বল করার যে সুযোগ পেয়েছিলেন, সেই স্মৃতিটাও সম্মান উজ্জল পাক জোরে বোলারের মনে।
২০১৮-২০১৯-এ ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়া সফর করেছিল। সেই সময়েই বিরাট কোহলিদের নেটে বোলিং করার সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যারিস রউফ। তখনও পাকিস্তানের জাতীয় দলে অভিষেক হয়নি তাঁর। কিন্তু সেই সময়েও গতি ভালোই ছিল রউফের বলে। অজি জোরে বোলারদের সামলাতে ভারত তখন বেছে নিয়েছিল পাকিস্তানের ফাস্ট বোলারকে। তবে এখন রউফ পাকিস্তান দলের নিয়মিত মুখ। শুধু নিয়মিত বললেও ভুল হবে, পাকিস্তানি পেস আক্রমণের অন্যতম কাণ্ডারি। তিনি ভারতের নেটে বল করার স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে নস্ট্যালজিক।
ইএসপিএন একটি তথ্যচিত্র মতো বানিয়েছে। সেখানে রউফকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমি যখন ভারতীয় দলের নেট বোলার ছিলাম, এবং বিরাট কোহলিকে বল করছিলাম, তখনই বুঝেছিলাম ও কত বড় ব্যাটার। আমার মনে হচ্ছিল, কোহলি জানে বল কোথায় গিয়ে তাঁর ব্যাটে হিট করবে। ও প্রতিটা বলই খুবই মনোযাগ দিয়ে খেলছিল। এবং এতে তাই বোঝা যায় যে, ওর একাগ্রতা কতটা তীক্ষ্ণ।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘যদিও এটা নেট অনুশীলন ছিল, কিন্তু ওর আগ্রাসন দেখে মনে হচ্ছিল যেন, আমি নেট বোলার হওয়া সত্ত্বেও ওর বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলছি। ওর অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ এবং তীব্রতা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, কেন ও সেরা প্লেয়ার।’
পাকিস্তান দলের অন্যতম ভরসা এখন রউফ। নাসিম শাহের চোটের কারণে এখন রউফের কাঁধে অনেক দায়িত্ব। এবার কোহলি বনাম রউফ যুদ্ধে কে জেতেন, সেটাই দেখার। তার জন্য এখন অবশ্য ১৫ অক্টোবর ভারত-পাক মহারণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।