আর কয়েকটা মাস বেঁচে থাকলে ছেলের হাতে বিশ্বকাপ দেখে নিশ্চিত গর্বিত হতেন মা, আবেগ লুকোতে পারলেন না কামিন্স

মায়ের অসুস্থতার জন্য গত মার্চে ভারত সফর ছেড়ে দেশে ফিরতে হয়েছিল প্যাট কামিন্সকে। মাতৃবিয়োগের ৮ মাসের মাথায় সেই ভারতের মাটিতেই অস্ট্রেলিয়ার ক্য়াপ্টেন হিসেবে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে তোলেন তিনি।

প্যাট কামিন্স। ছবি- এএফপি।

গত মার্চে টেস্ট সিরিজের মাঝেই মায়ের অসুস্থতার জন্য ভারত সফর ছেড়ে দেশে ফিরতে হয়েছিল প্যাট কামিন্সকে। বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির মাঝেই মাতৃবিয়োগ হয় অজি দলনায়কের। বছর ঘোরার আগেই সেই ভারতের মাটিতে ফিরে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে তোলেন কামিন্স।

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে উচ্ছ্বাসে গা ভাসালেও নিজের আবেগ লুকিয়ে রেখেছিলেন কামিন্স। তবে দেশে ফিরে এবিসি নিউজের সাক্ষাৎকারে অজি দলনায়ক জানান, বিশ্বকাপ খেলার সময় প্রতিটি দিন তাঁর মায়ের কথা মনে পড়েছে। বার বার এটা মনে হয়েছে যে, মা বেঁচে থাকলে নিশ্চিত গর্বিত হতেন। কামিন্স অবশ্য এটাও জানাতে ভোলেননি যে, তাঁর মা ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর বিস্তর সাফল্য দেখে গিয়েছেন।

কামিন্স বলেন, ‘(বিশ্বকাপ চলাকালীন) প্রতিদিন মায়ের কথা মনে পড়েছে। আমার সৌভাগ্য যে, এই বছরের আগেই মা আমার বিস্তর সাফল্যের সাক্ষী থেকেছেন। আজ আমি যা কিছু, তার জন্য মায়ের অবদান অনেক। আমি নিশ্চিত, উনি (আমাদের বিশ্বকাপ জয়ে) গর্বিত হবেন।’

উল্লেখ্য, বছরের শুরুতে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলার পরেই দেশে ফেরেন কামিন্স। ইন্দোরের তৃতীয় টেস্ট এবং আমদাবাদের চতুর্থ টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। শেষে আমদাবাদ টেস্ট চলকালীন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কামিন্সের মাতৃবিয়োগের কথা জানানো হয়। ২০০৫ সালে কামিন্সের মা মারিয়ার ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেই থেকেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। দীর্ঘ ১৮ বছরের লড়াই থেমে যায় ২০২৩-এর মার্চে।

কামিন্সকে অবশ্য বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে আমদাবাদের গ্যালারির একলক্ষ ভারতীয় সমর্থকদের চুপ করিয়ে বিশ্বকাপ জেতার বিষয়টি। অজি দলনায়ক স্পষ্ট জানান যে, গ্যালারিতে কোথাও হলুদ জার্সির লেশমাত্র ছিল না। সারা স্টেডিয়াম ছিল নীল জার্সিতে ঢাকা। তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে যে রকম নিস্তব্ধতা ছিল স্টেডিয়ামে, তা তিনি চাইলেও ভুলতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে অস্ট্রেলিয়া। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে ভারত। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪০ রান তুলে অল-আউট হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। পালটা ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৪৩ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২৪১ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। ১৩৭ রান করে ম্যাচের সেরা হন ট্র্যাভিস হেড।