ভারতের মাটিতে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। আর আমদাবাদে ফাইনালের আগেই পিচ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। সেমিফাইনালে পিচ বিতর্কের পর এই জল্পনা আরও চার গুণ বেড়ে গিয়েছে। সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েতে স্থানীয় অ্যাসোসিয়েশনের কিউরেটররা সেমিফাইনালের দেড় দিন আগে পিচ পরিবর্তন করে দিয়েছিল। ভারতীয় স্পিনাররা যাতে সুবিধে পায়, সেই রকম পিচ তৈরি করা হয়েছিল। যদিও এই বিষয়ে আইসিসি সম্মতি দেওয়ার পরেই পিচ পরিবর্তন করা হয়েছিল। এবং আইসিসি-র পিচ পরামর্শদাতার প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার পরেই এটি করা হয়েছিল এবং বিশ্বকাপের মতো দীর্ঘ টুর্নামেন্টে এটি অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। এছাড়া, আইসিসি নকআউট ম্যাচের জন্য একটি নতুন পিচ বাধ্যতামূলক বলে কোনও নিয়মের উল্লেখও করেনি।
হয়তো ফাইনালের জন্য মাঠের পরিবর্তন হয়েছে। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম থেকে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভেন্যু পরিবর্তিত হয়েছে। তবে পিচকে কেন্দ্র করে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত দু'টি ভেন্যুতে ব্যবহৃত মাটির ধরন একই- লাল বা কালো। এই কারণেই হয়তো বা সেমিফাইনালের মতো ফের 'পিচ পরিবর্তন' হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, হয়তো ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি যে পিচে হয়েছিল, সেখানেই হতে পারে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল ম্যাচ।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ফাইনালের হাইভোল্টেজ ম্যাচের জন্য কিউরেটররা দু'টি পিচ প্রস্তুত রেখেছেন। সেই পিচ দু'টি কোনওটিই মাঠের কেন্দ্রে নয়। ফাইনালের জন্য যে পিচটি ব্যবহার করা হতে পারে, সেটি মাঠের ডান দিকে। কিন্তু কিউরেটরদের আবার বাঁ-দিকের অন্য একটি পিচে কাজ করতে দেখা গেছে। কভারগুলি সরিয়ে দুই পিচেই সঠিক ভাবে রোলিং চলছিল।
শুধু তাই নয়, ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে দু'টি পিচেরই পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছে। এটা বলা কঠিন যে, কোন পিচে খেলা হবে। তবে রোহিত, রাহুল পিচ নিয়ে বেশ স্বস্তিতে বলেই মনে হয়েছে। রোহিত হাঁটু গেড়ে বসে তাঁর বুড়ো আঙুল দিয়ে পিচে একাধিকবার চাপ দেন- সম্ভবত দৃঢ়তা পরীক্ষা করার জন্য। দ্রাবিড়ও নিজের মতো করে ভালো ভাবে পিচ পরিদর্শন করেন। দ্রাবিড় অবশ্যই গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই পিচ নিয়ে খুব সতর্ক ছিলেন। তিনি ম্যাচের আগে বিভিন্ন শহরে পৌঁছেই আগে ছুটতেন স্টেডিয়ামের পিচ পরিদর্শন করতে।
তবে যে পিচেই খেলা হোক না করে, সেটি কিছুটা ধীর গতির হতে পারে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে রান-স্কোর করা কঠিন হবে। কিছু স্পঞ্জি বাউন্স আশা করা হচ্ছে। তবে রোহিত এবং দ্রাবিড় যখন পিচ পরিদর্শন করছিলেন, তখন ঘাস দেখা গিয়েছে। তবে শনিবার তা ছেঁটে ফেলা হতে পারে।
পিচের প্রকৃতি এবং অস্ট্রেলিয়ার একাদশে বাঁ-হাতিদের সংখ্যা খুব স্বাভাবিক ভাবেই অশ্বিনের নির্বাচনকে সমীকরণে নিয়ে এসেছে। প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেও খেলেছিলেন অশ্বিন। শুক্রবার ঐচ্ছিক নেট সেশনে খুব কম ভারতীয় ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিজ্ঞ স্পিনার অশ্বিন কিন্তু হাজির হয়েছিলেন। এবং তাঁর স্পিন বোলিং সঙ্গী রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে কৌশল নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে লিগের ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়ার গোড়ালিতে চোট পাওয়ার পর থেকে ভারত অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলেছে। তারা সূর্যকুমার যাদবকে ৬ নম্বরে খেলাচ্ছে। শার্দুল ঠাকুরকে বাদ দিয়ে তাঁর জায়গায় মহম্মদ শামিকে খেলানো হচ্ছে। আর শামি দুরন্ত ছন্দে রয়েছএ। ইতিমধ্যে ৬ ম্যাচ খেলে তিনি ২৩ উইকেট নিয়ে ফেলেছেন। তবে অশ্বিন যদি একাদশে সুযোগ পান, তবে দল থেকে বাদ পড়বেন মহম্মদ সিরাজ।