পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেদার ছাপ্পা পড়েছে রাজ্য জুড়ে। তবে কোথাও কোথাও বিরোধীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন ছাপ্পার বিরুদ্ধে। কোথাও দুষ্কৃতীদের আটকানো হয়, আবার কোথাও চরম উত্তেজনার বশে ব্যালট বাক্স নিয়ে জলে ফেলে দেওয়া হয় বা ভাঙচুর করা হয়। বিভিন্ন জায়গায়র মতো ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার থেকেও। যেই অভিষেক সারা বাংলায় 'নজজোয়ার' করে স্বচ্ছ ভোটের কথা বলেছিলেন তাঁর এলাকায় নাকি ছাপ্পা দিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করে তৃণমূল। আর সেই ছাপ্পা রোখার চেষ্টা করেছিলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তথা প্রার্থী। সেই রোষেই নাকি ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত তিনি। জানা গিয়েছে, জখম বিজেপি নেতার নাম কুণাল হালদার। তিনি ডায়মন্ড হারবার-১ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। তিনি এবারের ভোটে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীও হয়েছেন। (পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় খবর এবং লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের হামলায় মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন কুণাল। ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবার-১ ব্লকের হরিণডাঙা অঞ্চলের পার্বতীপুরে। সেখানকার ২১৩ নম্বর বুথে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল গত শনিবার। পরে রাতেও সেই এলাকায় 'ঝামেলা' হয় বলে অভিযোগ করে গেরুয়া শিবির। এদিকে ছাপ্পা রুখতে যাওয়া কুণালের ওপর চড়াও হয়েছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও এই অভিযোগ নিয়ে কোনও শব্দব্যয় করেনি ঘাসফুল শিবির। এদিকে কুণালের বৃদ্ধা মা সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের উদ্বেগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'সর্বক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। রাতে ছেলেরা যখন বাড়ি ফেরে, তারপরই একটু স্বস্তি ফেরে মনে। তাও অবশ্য শান্তি নেই। আমার বাড়িতে এসেই দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়ে যায়। বাড়িতে বোমা ফেলার, ভাঙচুর করার হুমকি দেয়। ভোটের দিন আমার ছেলেকে অকারণে মেরেছে। পুলিশের কাছে গিয়েও লাভ নেই। কী করবে ওরা? ফোন করলে এসে বাড়িতে ঘুরে যায়। কিছুই করে না আর।'
এদিকে এই হামলা প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বিজেপির ডায়মন্ড হারবার সংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সবিতা চৌধুরী। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণ চলাকালীন মণ্ডল সভাপতি কুণাল সেই এলাকাতেই ছিলেন। তিনি দেখলেন যে হরিণডাঙায় ছাপ্পা চলছিল। সেই ছাপ্পা আটকাতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় কুণালকে মারধর করা হয়। ২১২, ২১৩, ২১৪ নম্বর বুথ দখল করে ছাপ্পা চলে। গুলি বোমার রাজনীতি চলছে এই ভোটে।' এদিকে ছাপ্পা এবং বুথ দখলের অভিযোগের আবহে আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ভোটের দিন বাসন্তীতে ভোটের দিন রক্ত ঝরে। ভোটের আগেও বাসন্তী রক্তাক্ত হয়েছিল। এদিকে ভোট শেষ হওয়ার পরও বাসন্তীতে আরসপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বেঁধেছিল।