হাতে আর ১০ দিন বাকি। তারপরই রাজ্যজুড়ে শুরু হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই গ্রামবাংলা জুড়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন শাসক–বিরোধী দলের নেতারা। মনোনয়ন পর্ব ঘিরে আগেই উত্তপ্ত হয়েছিল গ্রামের মাটি। এবার সেই গ্রামের মাটিতেই বিজেপি খেল সেমসাইড গোল। আর তাতেই উত্তপ্ত রাজ্য–রাজনীতি। অবাক করা ঘটনা হল— বিজেপির জেলা সভাপতিকেই গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে বেদম মারধর করল বিজেপিরই কর্মীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে এখন এটাই চর্চিত বিষয়। মঙ্গলবার সকালের চায়ের দোকানে এটাই মজার খোরাক।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে রায়দিঘি গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে একটি সভাও করেন। তারপর রায়দিঘি থেকে এগিয়ে যায় সুকান্ত মজুমদারের কনভয়। আর তাঁর কনভয়ের সামনের গাড়িতে ছিলেন সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি প্রদ্যুৎ বৈদ্য। তাঁকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসেন বিজেপি কর্মীরা। রায়দিঘি সেতুর কাছে আসতেই তাঁর গাড়ি বিজেপি কর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। তাঁর গাড়ি তখন সেখানে আটকে দেওয়া হয়। তখন বাধ্য হয়ে গাড়ির দরজা খুলতেই তাঁকে টেনে নামানো হয়। তারপর বিজেপি সভাপতিকে বেদম মারধর করা হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? প্রদ্যুতকে চড়–কিল–ঘুসি মারেন কর্মীরা বলে অভিযোগ। কারণ এই জেলা বিজেপির সভাপতি এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট দেওয়া নিয়ে স্বজনপোষণ করেছেন বলে তাঁদের দাবি। তাই গাড়ি আটকে প্রথমে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তারপর গাড়ির দরজা খুলতেই টেনে নামিয়ে আনা হয় সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি প্রদ্যুৎ বৈদ্যকে। তারপর বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রকৃত বিজেপি কর্মীদের টিকিট দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন কর্মীরা। এই ঘটনার পর জেলা বিজেপি সভাপতি ঘটনাটি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: সরকারি চিকিৎসকরা এবার চিঠি দিলেন রাজ্যপালকে, বড় অভিযোগে আলোড়ন রাজ্যে
আর কী জানা যাচ্ছে? এই বিজেপির জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই ক্ষোভ জমা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে বাগে পাওয়া যাচ্ছিল না। এখানে কোনও কাজে দলের কর্মীদের পাশে এসে দাঁড়াননি তিনি বলে অভিযোগ। এমনকী অনেক কর্মীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন প্রদ্যুৎ বলে অভিযোগ কর্মীদের বড় অংশের। তার উপর পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট নিয়ে স্বজনপোষণ করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা বিজেপির প্রকৃত সদস্যই নয় বলে অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেই বিজেপি কর্মীদের হাতে খোদ জেলা সভাপতির মারধর খাওয়ার ঘটনা গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।