এবার সরাসরি ডাক্তারি পরীক্ষায় টুকলির অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। এমনকী সেই চিঠিতে গণ–টোকাটুকির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এটা এখন সবচেয়ে বড় অভিযোগ। যা ঘিরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ডাক্তারির বিভিন্ন পরীক্ষায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তাঁদের। গণ–টোকাটুকি চরমে পৌঁছেছে বলে জানিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিজ্ঞ সরকারি চিকিৎসকদের বড় অংশ। এই বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে তদন্ত করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। বামপন্থী সরকারি চিকিৎসকরাই এই অভিযোগ তুলেছেন বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী লেখা হয়েছে চিঠিতে? ডাক্তারি পরীক্ষায় এই গণ–টোকাটুকি করেছেন হবু চিকিৎসকরা। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই এই চিঠি লিখতে হচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসকদের। এখন টুকে পাশ করছে এমবিবিএস পরীক্ষা। রাজ্যপালকে তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে, রাজ্যে মেডিক্যাল শিক্ষার সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ পরীক্ষার কেন্দ্রে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় অবজার্ভার বা পরিদর্শক পাঠাচ্ছে না। এমনকী সিসিটিভি বন্ধ করে রাখা হচ্ছে।’ সুতরাং পরীক্ষা কেমন হচ্ছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসকরা।
আর কী জানা যাচ্ছে? একমাস আগেই গণ–টোকাটুকির অভিযোগ তুলে ৮ জুন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দেন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’–এর সরকারি চিকিৎসকরা। আর তারপর তাঁরা রাজ্যপালকে চিঠি দেন। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, ‘আমরা পরীক্ষার সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক করেই নিয়ে থাকি। তারপরও যখন গণ–টোকাটুকির অভিযোগ উঠছে তখন আমরা খতিয়ে দেখছি।’ তবে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতেই রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও এখন রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গে আছেন। সেখান থেকে ফিরে বিষয়টি দেখেবেন।
আরও পড়ুন: দিনহাটায় গুলিতে খুন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী, আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ৬
কেমন অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে? সূত্রের খবর, ডাক্তারি পড়ুয়াদের মধ্যে গণ– টোকাটুকির প্রবণতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সেটার সুযোগ নিচ্ছেন আরও কিছু অসাধু চিকিৎসক ও চিকিৎসক–অধ্যাপক। আর তার ফলে হবু চিকিৎসকরা এমবিবিএস পড়াকালীনই বিভিন্ন বেসরকারি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হচ্ছেন। আর স্নাতকোত্তরের (এমডি, এমএস)–এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই এমবিবিএস নিয়ে তাঁরা খাটতে চাইছেন না। পঠনপাঠন না করেই পাশ করতে চাইছেন। সেটারই সুযোগ নিয়ে কিছু চিকিৎসক মোটা টাকা কামাচ্ছে। আর গণ–টোকাটুকি বাড়ছে।