পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বনাম রাজ্যপালের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। আগে একবার রাজীব সিনহাকে ডেকেছিলেন সিভি আনন্দ বোস। তখন তিনি যেতে পারেননি রাজভবনে। এই সংঘাতের আবহের মধ্যেই আবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে তলব করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আজ, রবিবার বিকেলে রাজভবনে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। নিয়োগের চিঠি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধলেও আজ রাজভবনে যাচ্ছেন রাজীব সিনহা বলেই সূত্রের খবর। আর রাজীবের সঙ্গে বৈঠকের পরই উত্তরবঙ্গ সফরে চলে যাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামীকাল সোমবার থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। সেটাও আবার উত্তরবঙ্গের জেলা কোচবিহার থেকে। আর ঠিক তখনই সোমবার পাহাড় সফরে যাচ্ছেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই একই পথে যুযুধান দুই প্রতিপক্ষের উপস্থিতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ পাহাড় সফরে রাজ্যপাল শুধু বেড়াতে যাচ্ছেন না। সেখানের কিছু কাজ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন তা সরেজমিনে দেখতে যাচ্ছেন বলেই সূত্রের খবর।
এদিকে সোমবার এবং মঙ্গলবার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখন শৈলশহর দার্জিলিংয়ে চষে বেড়াবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখান থেকে রাজ্যপাল লক্ষ্য রাখবেন নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল সুপ্রিমো কি বলছেন। আক্রমণের তির তাঁর দিকে থাকছে কিনা সেটাও দেখে নেবেন। কারণ পাটনার বিরোধী বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর তির কিন্তু রাজ্যপালের দিকে ছিলই। সেখানে এবার দু’জনের গন্তব্যস্থল আলাদা হলেও পথটা কিন্তু একই। তাই সব মিলিয়ে আগামী কয়েকদিন সরগরম থাকবে উত্তরবঙ্গের রাজনীতি বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নবজোয়ারের পর পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে নামছেন অভিষেক, তৈরি হয়েছে সূচি
অন্যদিকে আর এক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। গত শনিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু রাজীব চিঠি দিয়ে তাঁর যেতে না পারার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। সূত্রের খবর, তারপরই ওই কারণ দেখিয়ে রাজভবন রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফিরিয়ে দেয়। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে যায়। এছাড়া মনোনয়ন–পর্বে জেলায় হিংসার ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল কড়া ভাষায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দুষেছিলেন। এমনকী তিনি বলেছিলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে যত রক্ত ঝরেছে, তার দায় নিতে হবে কমিশনারকেই। সেখান থেকে আজকের তলব এবং তারপর পাহাড় সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।