কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো নির্ধারিত সময়েই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে পদক্ষেপ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ৮০০ কোম্পানি আধাসেনা চেয়ে আবেদন করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফায় প্রত্যেক জেলার জন্য এক কোম্পানি হিসেবে মোট ২২ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে। তবে প্রথম দফায় ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আজ, শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা জানানো হয়েছে।
এদিকে এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে সিআরপিএফ থাকবে ৫০ কোম্পানি, বিএসএফ থাকবে ৬০ কোম্পানি। ২০ কোম্পানি আইটিবিপি, ২৫ কোম্পানি এসএসবি , ২০ কোম্পানি আরপিএফ আসছে বাংলায়। আর ২০ কোম্পানি আরপিএফ, সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স মিলিয়ে থাকবে মোট ২০০ কোম্পানি। বাকি ১২টি রাজ্য থেকে স্পেশাল আর্মড পুলিশ ফোর্স থাকবে ১১৫ কোম্পানি বলে খবর। আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বাংলায় হিংসার নানা ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি বিরোধীদের। তারপরও একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী পাঠাচ্ছে না অমিত শাহের মন্ত্রক।
অন্যদিকে তবে এই ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে খুশি নন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে যাতে আদালত রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চাপ দেয় সেজন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে ১০ কোম্পানি করে পুলিশ আসবে বাংলায়। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে ২০ কোম্পানি করে পুলিশ আসবে। আবার ত্রিপুরা, মিজোরাম, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয় এবং মহারাষ্ট্র থেকে ৫ কোম্পানি করে বাহিনী আসবে বলে খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? প্রথমে ২২ জেলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপর তা নিয়ে বিরোধীরা মামলা করে কলকাতা হাইকোর্টে। তখন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০১৩ সালের থেকে কম বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না। এই নির্দেশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশন আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায়। কিন্তু একদফা নির্বাচনে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই আবার কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছেন তিনি। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি পাঠানো সম্ভব নয়। কোনও সরকারই সেটা দিতে পারবে না। গতবার পাঁচ দফায় ভোট হয়েছিল। এবারও ভোটের দফা বাড়ানো হোক।’ আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাটনায় যাওয়ার আগে বলেন, ‘বাংলার পুলিশ অফিসাররা অনেক দক্ষ। স্কটল্যান্ড পুলিশের সঙ্গে একটা সময় কলকাতা পুলিশের তুলনা করা হতো। আমাদের পুলিশ অফিসাররা অনেক স্মার্ট। তাই বলছি, আমাদের যেন বেশি স্মার্টনেস কেউ না দেখায়। ওরা যত পারে বাহিনী দিক। কিন্তু সেই সংখ্যা তো মানুষের থেকে বেশি হবে না। আমাদের কোন অসুবিধা নেই। মানুষ ভোট দেবেন।’