৫৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে যে সব কেন্দ্রের ওপর গোটা দেশের নজর থাকবে, তারমধ্যে অন্যতম হল মহারাষ্ট্রের বারামতি। পাওয়ার পরিবারের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কার হাতে থাকবে, সেটা অনেকাংশে নির্ধারিত হবে এবারের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে মোট ৩৮ জন প্রার্থীর নমিনেশন চূড়ান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে প্রধান দুই যুযুধান পক্ষ হল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সুনেত্রা পাওয়ার বনাম ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (শরদ পাওয়ার) এর সুপ্রিয়া সুলে।
মহারাষ্ট্রে লোকসভা কেন্দ্রগুলির ভোট ৭ দফার মধ্যে প্রথম ৫ দফায় শেষ হয়ে যাবে। প্রথম দফা, দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হয়ে যাওয়ার তৃতীয় দফা অর্থাৎ ৭ই মে যে কেন্দ্র গুলিতে ভোটগ্রহণ হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো বারামতি।
১৯৫৭ সালর লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন বারামতি লোকসভা কেন্দ্রে প্রথম ভোট গ্রহণ হয়েছিল। তখন এই কেন্দ্রটি বোম্বে রাজ্যের অন্তর্গত ছিলো, পরবর্তীকালে ১৯৬০ সালে বোম্বে ভেঙে গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র রাজ্য গঠিত হওয়ায় বারামতি কেন্দ্রটি মহারাষ্ট্র রাজ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। লোকসভা কেন্দ্র হিসেবে বারামতি কেন্দ্রে ১৯৫৭ সালের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী জাধে কেসভরাও মারুতিরাও ৪২.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত যে দশবার লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল তার মধ্যে মাত্র দুবার এমন প্রার্থীরা এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন যারা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের তরফ থেকে ভোটে অংশগ্রহণ করেননি।
১৯৭৭ সালের নির্বাচনে বারামতি লোকসভা কেন্দ্রে ভারতীয় লোক দলের প্রার্থী সম্ভাজিরাও কাকড়ে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় কংগ্রেস (সোশ্যালিস্ট) দলের প্রার্থী শরদ পাওয়ার ভোটে জিতে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালের নির্বাচনের পর সরকার স্থায়ী না হওয়ায় ১৯৯৯ সালে পুনরায় লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল এই কেন্দ্রে।
সেই ১৯৯৯ থেকে ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪, ২০১৯ সালের নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিবারই ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রার্থীরা এই বারামতি কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে আসছেন। শেষ তিনবারের লোকসভা নির্বাচনেই ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী সুপ্রিয়া সুলে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথমবারে তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৬৩.৫ শতাংশ, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ৫২.৬ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে বিজেপির ভোট শতাংশ ২০০৯ এর নির্বাচনে ২০.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৯ এর নির্বাচনে ৪০.৯ শতাংশ হয়েছিল। এনসিপি ভাগ হওয়ার পর এবার এখানে গৃহযুদ্ধ। একদিকে আছেন অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ার। অন্যদিকে রয়েছেন শরদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে। এরমধ্যে সুনেত্রাকে বাইরের লোক বলেছেন শরদ পাওয়ার। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে শেষ বিচারে পাওয়ার পরিবারের রাজনৈতিক চাবি কার হাতে থাকবে, সেটা ঠিক হবে ৪ জুন।