লোকসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) হাতিয়ার করে কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করছে বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছেন। আর সিএএ দেশে কার্যকর হওয়ার পর থেকে আরও জোরদার আক্রমণে নেমেছেন। এবার সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সিএএ-কে ‘বিভাজনের স্কিম’ বলে মেয়র আক্রমণ করেছেন।
আরও পড়ুনঃ মাথায় পট্টি নিয়ে গার্ডেনরিচে মমতা, নিজের এলাকায় অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কী বললেন মেয়র?
রবিবার মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামে দলীয় কর্মিসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফিরহাদ বলেন, সিএএ হল মোদী সরকারের বিভাজনের স্কিম। এর মাধ্যমে হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে বিভাজন করা হচ্ছে। কেন্দ্রকে আক্রমণ করতে গিয়ে ফিরহাদ রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, শিক্ষাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের প্রশংসা করে তিনি সিএএ নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। ফিরহাদ বলেন, লোকসভার আগে বিজেপি 'বিভাজনের প্রকল্প' সিএএ কার্যকর করল।
ফিরহাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের উত্তর মালদার প্রার্থী প্রসূন বন্দোপাধ্যায় এবং দক্ষিণ মালদার প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি। ছিলেন জেলার দুই মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তাজমুল হোসেন, তৃণমূল জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি-সহ সমস্ত বিধায়ক, জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। এছাড়াও ছিলেন দলের জেলা ও শাখা সংগঠনের নেতারা।
দেশের নাগরিক থাকা সত্ত্বেও কেন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ফিরহাদ। তিনি জানান, কেউ ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় আবার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে এদেশে থেকে গিয়েছেন। তাদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড সব সব রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁদের নতুন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে?
এর পাশাপাশি কংগ্রেস ও সিপিএমকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ফিরহাদ। তাঁর কথায়, এই রাজ্যের কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা বিজেপির মতোই কথা বলছেন। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা বরকত গনি খান চৌধুরীর কথা উল্লেখ করেন ফিরহাদ। তিনি জানান, সেই সময় কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের ঘোর বিরোধিতা ছিল। আর এখন সেই কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যদিও এ নিয়ে পালটা ফিরহাদকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়, মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই আইন। এসব কথা বলে আসলে তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।