লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন সন্দেশখালির আরও একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গেল। ভাইরাল ওই ভিডিয়ো’তে বিস্ফোরক দাবি করেছেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। সন্দেশখালির আন্দোলনকারী হিসেবে যাঁদের রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁদের পরিচয় নিয়ে এবার সংশয় প্রকাশ করলেন তিনি। আন্দোলনকারী পিযালি দাস ওরফে মাম্পি দাসও প্রশ্ন তুললেন। ভিডিয়ো’র সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। নতুন এই ভিডিয়ো’তে রাইসিনা হিলসে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করা নির্যাতিতাদের পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র।
এদিকে এই ভিডিয়ো কবে ও কোথায় তোলা হয়েছে সেটা স্পষ্ট নয়। তাহলে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়া সন্দেশখালির নির্যাতিতারা কি ভুয়ো? টাকার বিনিময়ে নির্যাতিতা সাজিয়ে রাইসিনা হিলসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? সন্দেশখালি কাণ্ডে নতুন ভিডিয়ো সামনে আসতেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের কটাক্ষ, পুরোটাই বিজেপির সাজানো। বাংলাকে অপমান করার ষড়যন্ত্র। ভিডিয়ো’র শুরুতেই রেখা পাত্রের পাশে দাঁড়ানো মাম্পিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘রাষ্ট্রপতি ম্যাডামের কাছে সন্দেশখালির কিছু নির্যাতিতাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা হলে আমরা কারা? আমরা সবাই তো গিয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী স্যরের সঙ্গে দেখা করতে। তা হলে আমাদেরকে ছাড়া রাষ্ট্রপতি ম্যাডামের কাছে কারা গেল? আমরা তা হলে কারা?’
আরও পড়ুন: সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ তৃণমূলের, জমা পড়ল ভিডিয়ো
অন্যদিকে বুধবার রাতে নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে বিজেপির বসিরহাট লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী রেখা পাত্র–সহ তিন মহিলাকে দেখা গিয়েছে। এক মহিলা বলেন, ‘অনুপ দাস নিয়ে গিয়েছিল বলে খবর পেয়েছি। তলায় তলায় শিবু হাজরার কাছ থেকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে নিতেন। ওঁর সঙ্গে একজন গিয়েছিলেন। তাহলে কি ওই মহিলা তৃণমূলের লোক? সামনে বিজেপি করেন?’ তারপরই বিজেপি প্রার্থী রেখাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নির্যাতিতারা সন্দেশখালিতে পড়ে আছি। তাহলে আমাদের হয়ে কারা গিয়েছে? সেটা জানা প্রয়োজন। আর রাষ্ট্রপতি ম্যাডামের কাছে গিয়েছেন যে, আমাদের কিছু জানিয়েছিলেন? আমরা আন্দোলনের মুখ, আমাদের না নিয়ে গিয়ে অন্যদের সাজিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাহস কে দিয়েছে?’
এছাড়া এই নতুন ভিডিয়ো আরও বিপাকে ফেলেছে। আগের স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো তো অস্বস্তি তৈরি করেছিলই। এবার নতুন ভিডিয়ো বাড়তি সংযোজন করল। প্রধানমন্ত্রী যখন বারাসতে এসেছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করেন রেখা এবং অন্যরা। তারপরই নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যান কিছু মহিলা। যাঁরা নিজেদের সন্দেশখালির আন্দোলনকারী বলে পরিচয় দেন। তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সন্দেশখালির রেখা এবং অন্যান্যরা। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘যে অনুপ দাসের কথা বলা হচ্ছে, তাঁকে আমি চিনি। উনি দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী। এখানে মহিলারা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করেছিলেন।’ আর সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর বক্তব্য, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো। অর্থের বিনিময়ে করা হয়েছে। সন্দেশখালির মহিলাদের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হল। বিজেপি গভীর ষড়যন্ত্র নোংরা রাজনীতি করেছে। এই নোংরা খেলার প্রতিবাদ হওয়া উচিত।’