লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে মালদায় দুটি আসন ছাড়তে রাজি ছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি কংগ্রেস। তাই পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে সিপিআইএমের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। বাম আমলে যে ‘অত্যাচার’ চলেছে, তা নিয়ে সরব হন। বুধবার মালদার সরকারি পরিষেবা প্রদানকারী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘আমি কংগ্রেসকে বললাম, তোমাদের একটাও বিধায়ক নেই। মালদায় তোমাদের দুটো লোকসভা আসন দিচ্ছি। আমরা জিতিয়ে দেব। বলল, না, আমার অনেক চাই। আমি বললাম, না, আমি তোমায় একটাও দেব না। তুমি আগে সিপিআইএমের সঙ্গ ছাড়। সিপিআইএম তোমার নেতা।’
অর্থাৎ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেতা বহরমপুর আসনও ছাড়তে রাজি ছিলেন না বলে কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নাম অবশ্য মুখে আনেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। যে অধীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনওদিনই ভালো ছিল না। রাজনৈতিক মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি, সেটা হল বহরমপুর। তৃণমূলের শাসন এবং গেরুয়া ঝড়ের মধ্যেও ২০১৯ সালে বহরমপুর থেকে ৮০,০০০ ভোটে জিতেছিলেন অধীর। যিনি ১৯৯৯ সাল থেকে টানা সাংসদ হয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ‘ধৈর্যের একটা সীমা থাকে’, অধীরকে কাঠগড়ায় তুলে জোট নিয়ে তুলোধনা অভিষেকের
সেই অধীরের আসনও যে ছাড়তে রাজি ছিলেন না মমতা, তা মুর্শিদাবাদের সভা থেকেও বুঝিয়ে দেন। মুর্শিদাবাদে সরকারি পরিষেবা প্রদানকারী অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘আমি একদিন কংগ্রেস করতাম। কংগ্রস থেকে আমায় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাংলার মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলাম। আমি ভাবলাম, বৃহত্তর স্বার্থে সবাই কাজ করবে। আমি সবার প্রথমে প্রস্তাব দিলাম, তোমদের একটাও বিধায়ক নেই, ঠিক আছে, তোমায় মালদার দুটো সিট দিচ্ছি আমি। তোমায় আমি জিতিয়ে দেব।'
তারপর কংগ্রেসের কী প্রতিক্রিয়া ছিল, সেটাও জানিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বলল, না হবে না। সঙ্গে-সঙ্গে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান (করে দিল)। আমি বললাম, ভাই নমস্কার। আমায় আমার মতো করতে দাও। আমি সিপিআইএমের সঙ্গে চলতে পারব না। ওরা আমার মাথায় মেরেছে। ওরা আমার পায়ে মেরেছে। ওরা আমার কোমরে মেরেছে। ওরা আমার চোখে মেরেছে। ওরা কত মানুষের জীবন কেড়েছে। ওরা কী করেনি। একটার পর একটা অত্যাচার করেছে।’
আরও পড়ুন: Adhir Chowdhury: আমি অনুতপ্ত! তৃণমূল সাংসদ ডেরেককে 'বিদেশি' বলেও পিছিয়ে এলেন অধীর