তাঁকে নিয়ে জল্পনা চলছিল। সোমবার তা সত্যিও হল। স্পিড পোস্টে চিঠি পাঠিয়ে তৃণমূলের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার। একটি চিঠি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীর কাছে এবং আরেকটি তৃণমূল ভবনে পাঠিয়ে দলত্যাগের কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে এদিন দীপক বলছিলেন, ‘বহু বছরের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল। আমি চিঠি দিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা দলকে জানিয়েছি।’ বিজেপি–তে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি দল ছাড়ার পর ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। তাঁদের পরামর্শ নিয়ে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই অন্য দলে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
সম্প্রতি ক্রমশই দল আর দীপকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় গরহাজির ছিলেন তিনি। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে খুব একটা দেখা যেত না। দলের জেলা সংগঠন এবং স্থানীয় কয়েকজন যুবনেতার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন দীপক। এমন আবহে তিনি যে কোনও সময় দল ছেড়ে দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছিল।
বাম জমানায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের সংগঠন মজবুত করতে দীপক হালদারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর আগে এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু পরে সে বিবাদ মিটে গেলে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবারের টিকিট পান দীপক। আর এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলই ছেড়ে দিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্কে ইতি টানলেন দীপক হালদার।
কিছুদিন আগেই বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে আসেন দীপক। তখন অবশ্য বলেছিলেন সৌজন্য সাক্ষাৎকার। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডায়মন্ড হারবারের বিধায়কের তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
উল্লেখ্য, দিন দুয়েক আগেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাসভবনে গিয়ে বিজেপি–তে নাম লিখিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষালরা। বিজেপি–র দাবি, আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা তৃণমূল ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের মধ্যে কি দীপক হালদারও রয়েছেন? রাজ্য রাজনীতিতে বরাবরই শোভন–ঘনিষ্ঠ দীপকের গন্তব্য এখন পদ্ম–কানন? সময়ই এর উত্তর দেবে।