চতুর্থ দফা ভোটের আগেই মালদহে ধাক্কা খেল সংযুক্ত মোর্চার। সংযুক্ত মোর্চার ‘সেম সাইড’ গোল করল ফরওয়ার্ড ব্লক। এই কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার বিরুদ্ধেই প্রার্থী দাঁড় করাল ফরওয়ার্ড ব্লক। তাঁদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে রফিকুল আলমকে। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী রফিকুল। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, জোটের নামে ফরওয়ার্ড ব্লককে মালদহ থেকে তুলে দেব, সেটা কোনওদিন হয় না। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে সংযুক্ত মোর্চার অভ্যন্তরে। তবে অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনার পরেও ফরওয়ার্ড ব্লকের পাশে দাঁড়ায়নি বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিআইএম।
ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ, বামেরা শুধু জোটের কংগ্রেস প্রার্থীকেই সমর্থন করেছেন। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে গোটা রাজ্যে যেখানে বাম কংগ্রেস ও আইএসএফ জোট বেঁধে সংযুক্ত মোর্চা গঠন হয়েছে, সেখানে এই ভাঙনে অস্বস্তিতে পড়েছে জোট নের্তৃত্বরা। এবারে গোটা রাজ্যে ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। এর বিপরিতে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোটের অপর দুই শরিক সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে অস্বস্তি দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে এবারে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন মোস্তাক আলম। গতবারের তিনি এই কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন। মালদহ জেলার ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমন্ত মৈত্র বলেন, ‘জোটের নামে দলটাকে কি মালদা থেকে তুলে দেব ? সেটা কখনওই হয় না।’
তাঁর প্রশ্ন, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের নামে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। তাহলে ২০২১ সালে সেটা কেন করছে না তারা? অথচ এই বিধানসভা কেন্দ্র একসময় ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। এই কেন্দ্র থেকেই ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তাজমুল হোসেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ, জোটের নামে এখন তাদের পিছনের সারিতে রাখা হচ্ছে। সেটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই এবার এই কেন্দ্রে স্বাধীনভাবে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।মালদহের সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক অম্বর মিত্র এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ এই বিশ্বাসভঙ্গ করার দায় ফরওয়ার্ড ব্লককে নিতে হবে। ২০১৬ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। তাই এবারও ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীর দাঁড়িয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর কেন্দ্র থেকে যে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়েছে, তার মনোনয়ন অবিলম্বে প্রত্যাহার করার বিষয়ে আমরা আমাদের রাজ্য নেতৃত্বকে বলব।’
জেলা তৃণমূলের কো—অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, ‘জোট করায় ওদের দলের অনেক নেতাই বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। সেই কারণে ফরওয়ার্ড ব্লক ওই আসনের প্রার্থী দিয়েছে। তবে এতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার সরকার গড়বেন।