করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। রাজ্যের ছবিটাও বেশ উদ্বেগজনক। আর পশ্চিমবঙ্গে ভোটপর্ব ঘিরে মিছিল–সমাবেশ–সভা জারি রয়েছে। বিজেপির তারকা প্রচারের তালিকায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এই নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল সিপিআইএম। প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে প্রচার চালানোয় তাঁকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি টুইট করে লিখেছেন, ‘মোদীর কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার থেকে দলের হয়ে প্রচার করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওঁর কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে নির্বাচনী প্রচার। আরও কিছু সময় বেঁচে থাকলে তিনি টিভিতে মুখ দেখানো ও শিরোনাম তৈরির জন্য চেষ্টা করেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়।’
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ইস্যুতে আক্রমণ করেছেন। রবিবার খড়দহের জনসভা থেকে নয়াদিল্লির লোক কল্যাণ মার্গের (প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন) বাসিন্দাকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘মোদী মিথ্যেবাদী। আজ কোভিডের এই বাড়বাড়ন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীই দায়ী। দেশের ভয়াবহ এই পরিস্থিতির জন্য তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।’ ভ্যাকসিন বণ্টনের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
সীতারাম ইয়েচুরি টুইটে আরও লেখেন, ‘ভারত এক গভীর সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে এক সেনাকর্তা যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু, মোদী ভোট প্রচারে ব্যস্ত। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁকে পাচ্ছেন না। বড় বড় সভা শেষ করার পর বৈঠকের নামে চমক দিচ্ছেন।’ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ি, মনমোহন সিং–সহ অনেক প্রধানমন্ত্রীকেই আমি দেখেছি। কিন্তু এইরকম অপদার্থ প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। কোনও দক্ষতা নেই। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। আর সেই পরিকল্পনার ভুলেই বাড়ছে করোনা। তাই এর দায় নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ইস্তফা দেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘আমাদের রাজ্যে ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে। কিন্তু তা এখনও দেয়নি কেন্দ্র। অথচ গুজরাতকে দেদার টিকা দেওয়া হচ্ছে। ভ্যাকসিনের অভাব নিয়ে মহারাষ্ট্র কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে। আজ আমিও কড়া চিঠি লিখেছি।’
প্রধানমন্ত্রীর কোভিড নিয়ে হুঁশ না ফেরায় ট্যুইটারে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা চিদম্বরম। পাশাপাশি একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে (মমতা) নির্বাচনী সভায় নরেন্দ্র মোদী যেভাবে উপহাসের সুরে ‘দিদি’ বলে ডাকছেন, তার সমালোচনাতেও তিনি সরব হয়েছেন। করোনাভাইরাসের মাথায় বসে বেহালা বাদ্যরত প্রধানমন্ত্রীর কার্টুন ট্যুইট করে তাঁর প্রশ্ন, ‘কোনও প্রধানমন্ত্রী এভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন? আমি তো ভাবতেই পারি না যে, জওহরলাল নেহরু বা মোরারজি দেশাই অথবা বাজপেয়ি এই ভাষায় কথা বলছেন।’