‘আমি ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে। চণ্ডীপাঠ করে বাড়ি থেকে বের হই। কিন্ত আমি সিডিউল কাস্টদের (তফসিলি জাতি) খাটে এনে ঘুম পাড়াই।’ শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নির্বাচনী সভা থেকে একথা বলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী ৬ এপ্রিল রায়দিঘিতে ভোটের আগে তফসিলিদের মন জয়ে অত্যন্ত কৌশলী পদক্ষেপ নিলেন তৃণমূল নেত্রী। বক্তব্যের সিংহভাগ অংশ জুড়ে বারবার জাতপাতের রাজনীতির বিরোধিতা করে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তিনি।
কয়েকমাস আগেও বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলার বিভিন্ন এলাকায় তফসিলি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের বাড়িতে গিয়ে দুপুরের আহার গ্রহণ করেছিলেন। শনিবার সেই প্রসঙ্গ তুলেও বিজেপিকে নিশানা করে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হোটেল থেকে খাবার এনে বিজেপি নেতৃত্ব খান বলেও কটাক্ষ করেন। তাঁর দাবি, তফসিলি জাতি-উপজাতি শ্রেণির মানুষের হাতে খান না বিজেপি নেতারা। পাশাপাশি বহিরাগত প্রসঙ্গ তুলে ফের বিজেপিকে একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, ‘বহিরাগত গুণ্ডাদের দিয়ে বাংলা দখল করতে দেবেন না। মা বোনেরা হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরোবেন।ভোটের দিন রাজনীতির খেলা হবে।’
গত বিধানসভায় এই আসন থেকে জিতেছিলেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। এবার তিনি টিকিট পাননি। তাঁকে নিয়ে দলের অন্দরে নানা ক্ষোভ ছিল। সেকথাও উল্লেখ করেন তৃণমূল নেত্রী। এবার এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন অলোক জলদাতা। মমতার দাবি, ‘দেবশ্রী রায় এখানকার বিধায়ক ছিলেন। তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ ছিল। সে কারণে এবার লোকাল প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’ এরসঙ্গেই সুন্দরবনের জন্য নানা উন্নয়নের ফিরিস্তিও দেন তিনি। আগামিদিনে ১০০ শতাংশ ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, আমফান পরবর্তী ক্ষেত্রে উপকূলবর্তী সুন্দরবন এলাকায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে শাসকদল। তবে সেই অনিয়মের প্রসঙ্গ কার্যত এড়িয়ে যান তৃণমূলনেত্রী।