তৃণমূল কংগ্রেসে নাকি তিনি ‘গুরুত্ব’ পাননি। তবে গেরুয়া শিবিরে যে অত্যন্ত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হচ্ছে, শুরুতেই সেই বার্তা দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই ডুমুরজলায় অমিত শাহ আসতে না পারায় একেবারে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। সেখানেই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি। সূত্রের মারফত এমনই খবর মিলেছে।
শুক্রবার রাতে কলকাতায় আসার কথা ছিল শাহের। সেই সফরের মধ্যেই আগামিকাল (রবিবার) ডুমুরজলায় রাজীবের হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিল্লি বিস্ফোরণের জেরে সেই সফর বাতিল হয়ে যায়। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরিতে ঠাসা কর্মসূচির কারণে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা আসতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও ধোঁয়াশা ছিল। বিজেপির অপর কোনও কেন্দ্রীয় নেতার সেই সভায় আসার কথা রয়েছে।
সূত্রের খবর, সেই পরিস্থিতিতে ডুমুরজলার সভার জন্য অপেক্ষা না করে শনিবারই রাজীবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। শনিবার সকালে তাঁর কাছে শাহের ফোনে আসে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই রাজীবের দিল্লি যাত্রায় চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে যায়। সেজন্য দ্রুত বিশেষ চাটার্ড বিমানের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিকেল চারটে সেই বিমান কলকাতা থেকে ছাড়বে। দিল্লিতে পৌঁছে নড্ডা এবং শাহের সঙ্গে দেখা করবেন রাজীব। তারপর শনিবার বা রবিবার সকালের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তারপর কলকাতায় ফিরে ডুমুরজলার সভায় হাজির থাকবেন রাজীব।
তবে শুধু রাজীব একা নন, দিল্লি সফরে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, উত্তরপাড়ার বিক্ষুব্ধ বিধায়ক প্রবীর ঘোষালরা সঙ্গী হচ্ছেন বলে সূত্রের খবর। সেই দিল্লি-যাত্রা নিয়ে রাজীব, বৈশালীরা মুখ খোলেননি। হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র শুধু জানিয়েছেন, দিল্লিতে এরকম একটি কর্মসূচি আছে। সেখানে সম্ভবত তিনিও যাচ্ছেন। তবে তাঁর কাছে শাহের কাছে ফোনে আসেননি বলে জানিয়েছেন।
তবে ডুমুরজলায় তো কেন্দ্রীয় নেতা আসছেন, তাহলে কেন তড়িঘড়ি দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল? রাজনৈতিক মহলের মতে, যে সব হেভিওয়েট নেতারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বা দিতে চলেছেন, তাঁদের মধ্যে সবথেকে পরিচিত মুখ হলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব। গত ১৯ ডিসেম্বর শাহের হাত থেকেই বিজেপির পতাকা তুলে নিয়েছিলেন শুভেন্দু। রাজীবের ক্ষেত্রেও সেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শেষমুহূর্তে তা ভেস্তে গেলেও রাজীবকে যে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেই বার্তা দিতেই তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত।