তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলায় জেলায়। বহু জায়গায় টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বিদায়ী বিধায়করা। বহু জায়গায় আবার ক্ষোভ ‘বহিরাগত’ প্রার্থী নিয়ে। শিলিগুড়িতেও ছবিটা আলাদা নয়। সেখানে প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগদানকারী অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিত্র। প্রার্থীর নাম শুনতেই শহরের তৃণমূল নেতারা বলছেন, ফের অশোক ভট্টাচার্যকে ওয়াক ওভার দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গোটা রাজ্যে বামেরা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হলেও শিলিগুড়িতে ছবিটা আলাদা। সেখানে নিজেদের রাজ্যপাট দখলে রেখেছে অশোক ভট্টাচার্য অ্যান্ড কোম্পানি। ২০১১ সালের নির্বাচন বাদ দিলে শিলিগুড়িতে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে শহর থেকে প্রার্থী নির্বাচন করতে দলনেত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হতে দেখা যায়, সেই অনুরোধ রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, ভোটপ্রচারে অংশগ্রহণ করবেন না তাঁরা।
তৃণমূল সূত্রে খবর ছিল এবার প্রার্থী হতে পারেন SJDA-র ভাইস চেয়ারম্যান নান্টু পাল। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর সব থেকে মন খারাপ তাঁরই। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার আমরা দলগতভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলাম, শহরের কাউকে প্রার্থী করা হোক। শিলিগুড়ির বাইরের কেউ যেন প্রার্থী না হন। কিন্তু তা না হওয়ায় আমি মর্মাহত। আমি এটা মেনে নিতে পারছি না। যিনি ক’দিন আগেও মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য সমালোচনা করতেন তাঁকে প্রার্থী হিসাবে মেনে নিতে পারবো না।’
জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার অবশ্য বলেন, ‘দল যাকে ভাল বুঝেছে তাঁকেই প্রার্থী করেছে। সর্বশক্তি দিয়ে আমরা দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর চেষ্টা করবো।’
এই নিয়ে তেমন কোনও মন্তব্য করতে চাননি অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এটা ওদের ব্যাপার। আমি কী বলবো? আমরা ওভার কনফিডেন্সে ভুগতে চাই না।’
শিলিগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘আমি আজই শিলিগুড়ি যাচ্ছি। রঞ্জনবাবুর সঙ্গে কথা হবে। ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকলে মিটিয়ে নেবো।’
রবিবার রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল করতে শিলিগুড়ি পৌঁছচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে মিছিল করবেন তিনি। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভের জের সেই সভায় পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।