শেষবার কর্ণাটক ভোটে এইচ ডি কুমারস্বামী মুখ্যমন্ত্রী হয়ে, কংগ্রেস জেডিএসের জোট সরকার গড়ার শপথের দিন একটি ছবি সামনে এসেছিল। সেখানে সমস্ত বিরোধী নেতাদের একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্লিন সুইপ করে কর্ণাটক থেকে।
1/8কর্ণাটকে দু'বার বাদ দিলে বিভিন্ন সময়ই আশির দশকের শেষ থেকে শাসকদ পরিবর্তনের ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে বিধানসভা ভোটে। ১৯৮৫ সাল থেকেই কন্নড়ভূমে এই ট্রেন্ড এযাবৎকালে ২০০৪ ও ২০১৮ সালে পরিবর্তিত হয়। তবে ২০২৩ সালে কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই জয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্য রাখে। কংগ্রেসের এই ভোটে জয়ের ফ্যাক্টর হিসাবে উঠে এসেছে, নিয়মনিষ্ঠ প্রচার, সংঘবদ্ধ নেতৃত্ব, স্থানীয় ইস্যুকে সঙ্গে নিয়ে ভোট প্রচার ও স্থানীয় শক্তিশালী নেতৃত্ব। বিজেপির ভরাডুবির ক্ষেত্রে মেরুকরণের রাজনীতি ছাড়াও চেনা লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কের মুখ ফেরানোও একটি বড় ফ্যাক্টর। তবে ২০২৩ কর্ণাটক ভোটের ফলাফল আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক।
2/8কর্ণাটকে মুসলিমদের ঘিরে সংরক্ষণ বাতিলের পদক্ষেপ, হিজাব বিতর্ক একটা সময় ঝড় তুলেছিল। এরপর দিল্লির রাজনীতিতে সংসদে রাহুল গান্ধীর আদানি ইস্যুতে সরব হওয়ার ঘটনা ও পরে মোদী পদবী ঘিরে তাঁর বিরুদ্ধে চলা মানহানি মামলায় রাহুলের ২ বছরের সাজা এবং সাজার জেরে সাংসদ পদচ্যূতি। প্রসঙ্গত, দেশের রাজনীতিতে একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের কোণঠাসা হওয়া, দুর্নীতি মামলায় সনিয়া, রাহুলের নাম উঠে আসার ঘটনার পর কংগ্রেসের রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে প্রশ্ন অনেকেই তুলেছিলেন। কেন্দ্র সমেত দেশের বাকি রাজ্যে যখন শক্তিশালী বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার, তখন কর্ণাটকের মতো ২২৪ আসনের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই নেহাতই প্রাসঙ্গিক দেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে। কর্ণাটকের এই জয় ২০২৪ লোকসভার ক্ষেত্রে কোন রাস্তা তৈরি করে সেদিকে নজর রাখা যাক। (PTI Photo/Bhojak) (PTI05_13_2023_000240A) *** Local Caption ***
3/8উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্ণাটকে একটি কম জনপ্রিয় সরকার নিয়ে বিজেপি নেমেছিল ভোট যুদ্ধে। বেঙ্গালুরুর মতো প্রযুক্তিনগরী সম্বলিত কর্ণাটকে এরপর বিজেপি হাঁটে মেরুকরণের রাজনীতিতে। দলের বহু বর্ষীয়ান নেতা ছেড়ে দেন বিজেপির সঙ্গ। ২০১৮ ভোটের ট্রেন্ডে শিক্ষা না নিয়ে ফের একবার চেনা স্ট্র্যাটেজিতে হাঁটে বিজেপি। ২০১৮ সালে বিধানসভা ভোটে জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতির মধ্যে ফারাক করে কন্নড়ভূম জানান দিয়েছিল জনতার মত। এবারও বিজেপি স্থানীয় নেতাদের ছেড়ে ফের একবার নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তিকে তুলে ধরে দলের ফাটলকেও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে ভুল, ঠিকের এই রাজনীতি থেকে চোখ ফিরিয়ে দেখা যাক, ২০২৪ সালের ভোটে এই কন্নড়ভূমের নির্বাচনী ফলাফলের প্রভাব। (PTI Photo/Nand kumar)(PTI05_13_2023_000135B)
4/8বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্ণাটক ভোট কংগ্রেসের কর্মীদের মনোবল বাড়াবে। যদিও ভোটের জয়ের কাণ্ডারী কন্নড় কংগ্রেস নেতা ডিকে শিবকুমার ও সিদ্দারামাইয়া, তাও এই ভোট রাহুল গান্ধীর ভাবমূর্তি জোরালো করবে। মনে করা হচ্ছে রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার প্রভাব কর্ণাটকে দারুনভাবে কাজে লাগিয়েছে কংগ্রেস। ২০১৯ লোকসভা ভোটে কর্ণাটক থেকে কংগ্রেস ১ টি আসন জিতেছিল, সেই খেলা ঘোরানোর সুবর্ণ সুযোগ গড়ে দিল ২০২৩ কর্ণাটক ভোট। (PTI Photo) (PTI05_13_2023_000146A) *** Local Caption ***
5/8২০১৯ সালে কর্ণাটকে ২৮ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২৬ টি জিতেছিল বিজেপি। সেই পারফরম্যান্স রিপিট করতে গেলে কর্ণাটক বিজেপির এককাট্টা হওয়া জরুরি। স্থানীয় স্তরে জনসংযোগ বাড়ানো প্রয়োজন। ২০২৪ ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও সচেতনতা প্রয়োজন। তবে এই ২০২৩ ভোটের পরও কিছু ফ্যাক্টর মাথায় রাখতে হবে। (PTI05_13_2023_000163A) *** Local Caption ***
6/8শেষবার কর্ণাটক ভোটে এইচ ডি কুমারস্বামী মুখ্যমন্ত্রী হয়ে, কংগ্রেস জেডিএসের জোট সরকার গড়ার শপথের দিন একটি ছবি সামনে এসেছিল। সেখানে সমস্ত বিরোধী নেতাদের একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্লিন সুইপ করে কর্ণাটক থেকে। ২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার আসে। পরে এই তিন রাজ্য থেকে লোকসভা ভোটে ৬৫ এর মধ্যে ৬২ আসনে জিতে যায় বিজেপি। ফলে বিরোধী ঐক্য ও রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার আসার পরও লোকসভায় বিজেপির দুর্দমনীয় গতিকে রোখা যায়নি ২০১৯ সালে। সেই ফর্মুলা ২০২৪ এও হবে কি না রয়েছে জল্পনা। (ANI Photo)
7/8Ahmedabad, May 13 (ANI): Congress workers celebrate the party's victory in the Karnataka Assembly elections, at party headquarters, in Ahmedabad on Saturday. (ANI photo)
8/8উল্লেখ্য, গত সব নির্বাচন মিলিয়ে কর্ণাটক প্রমাণ করেছে, এপর্যন্ত কেন্দ্রে মোদী, রাজ্যে কংগ্রেস তাঁদের পছন্দ। তবে কংগ্রেসকেও সচেতন হতে হবে যে, যে বিজেপিকে তারা কর্ণাটকে হারিয়েছে, তা দুর্বল বিজেপির সরকার ও সংগঠন। তবে দিল্লিতে খেলাটা আলাদা। কর্ণাটকে স্থানীয় কংগ্রেস হেভিওয়েট নেতাদের জনপ্রিয়তা, প্রভাব বড় ফ্যাক্টর ছিল। তবে জাতীয় রাজনীতিতে ২০২৪ ভোটে একাধিক রাজ্যে রয়েছেন বিজেপির জনপ্রিয় তারকা নেতারা। পাশাপাশি মোদী ফ্যাক্টর থাকবে বিজেপির সঙ্গে। সেই জায়গায় রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তা ঘিরে কংগ্রেস আরও উদ্যোগ নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। 3. (PTI Photo) (PTI05_13_2023_000010B)