ইরফান খানের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় মহারাষ্ট্রের ইগাতপুরি গ্রাম। যে গ্রামে রয়েছে প্রয়াত অভিনেতার একটি খামারবাড়ি,আজীবন যে গ্রামের মানুষের পাশে অভিভাবকের মতো দাঁড়িয়ে থেকেছেন ইরফান খান। এবার সেই গ্রামের বাসিন্দারা ইরফানের স্মৃতিতে বদলে ফেলতে চলেছেন গ্রামের এক এলাকার নাম। এখন থেকে ইগাতপুরি গ্রামের নামের একটি বিস্তৃর্ণ এলাকা পরিচিত হবে হিরো-চি-ওয়াড়ি নামে। এই মরাঠি শব্দের বাংলা তর্জমা নায়কের পাড়া।
কেন ইরফান খানকে একখানি ভালোবাসেন মহারাষ্ট্রের এই পাহাড়ি উপত্যকার মানুষজন? জানা যায় বেশ কয়েকবছর আগে যখন এখানে ফর্মহাউস তৈরির জন্য জমি কিনতে যান ইরফান তখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই গ্রামের বেহাল দশা তাঁর চোখে ধরা পড়েছিল। গ্রামে ছিল না কোনও অ্যাম্বুলেন্স,ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য কম্পিউটার,উপযুক্ত বই কিছু মজুত ছিল না। নিজের উদ্যোগে এই গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা শুরু করেন ইরফান। প্রতিটি স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য বই-খাতা,কম্পিউটার থেকে রেনকোট-সোয়েটার পর্যন্ত কিনে দিয়েছিলেন ইরফান খান। প্রত্যেক উত্সবে ইরফান খান হাজির না থাকলেও গ্রামবাসীদের জন্য পৌঁছে যেত মিষ্টি,উপহার।
‘উনি ভগবানের দূত ছিলেন অনেক পরিবারের কাছে। যখনই কেউ ওঁনার কাছে সাহায্য চেয়েছ উনি এগিয়ে এসেছেন’,জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য গোরখা ভোদকে।
গত ২৯ শে এপ্রিল সকালে মুম্বইয়ের ধীরুভাই কোকিলাবেন হাসপাতালে প্রয়াত হন ইরফান খান। ২০১৮ সাল থেকে মারণরোগ ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিলেন অভিনেতা। এদিন থেমে যায় তাঁর জীবনযাত্রা। তবে ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে আজীবন ঘর করে থাকবেন তিনি। বেঁচে থাকবে তাঁর শিল্পীসত্ত্বা। ঠিক যেমনভাবে তিনি বেঁচে থাকবেন ‘হিরো-চি-ওয়াড়ি’র প্রতিটা মানুষের মনে তাঁদের অভিভাবক, তাঁদের ভগবানের দূত হয়ে।