সোমবার সকাল সকাল খারাপ খবর বাংলা বিনোদন জগত থেকে। চলে গেলেন অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তী। তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে, তিনি অভিনেতা শংকর চক্রবর্তীর স্ত্রী। সোমবার ভোর চারটে নাগাদ শহরের এক বেরসকারি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন সোনালি দেবী। বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন সোনালি চক্রবর্তী। গত অগস্ট মাসেও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন। সেই সময় স্বামী শংকর চক্রবর্তী হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর পেটে ফ্লুইড জমছে। সেইসময় বাড়ি ফিরে এলেও এবার শেষরক্ষা হল না।
সোনালি চক্রবর্তীর প্রয়াণে মনভার টলিপাড়ার। আচমকা সোনালি চক্রবর্তীর এই চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। সোনালি চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শোকবার্তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, 'বিশিষ্ট অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র দাদার কীর্তি, সংসার সংগ্রাম ইত্যাদি। চলচ্চিত্র ছাড়াও জননী, গাঁটছড়া ইত্যাদি জনপ্রিয় টিভি সিরিয়ালে তিনি অভিনয় করেছেন। তাঁর মৃত্যু অভিনয় জগতের এক বড় ক্ষতি। আমি সোনালি চক্রবর্তীর স্বামী শংকর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।'
অসুস্থতা সত্ত্বেও অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে বলীয়ান ছিলেন সোনালি চক্রবর্তী। তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছে স্টার জলসার ‘গাঁটছড়া’ ধারাবাহিকে। খড়ির জেঠিমার চরিত্রে দর্শক দেখেছে তাঁকে। এবছর দীপাবলির উৎসবে পরিবারের সঙ্গে প্রদীপ জ্বালিয়েছেন। এরপর ধীরে ধীরে শরীর খারাপ হতে শুরু করে। গত দু-দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
স্ত্রীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শংকর চক্রবর্তী। ভেঙে পড়েছেন অভিনেতা। এদিন ফেসবুকে স্ত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন অভিনেতা স্বয়ং। সোনালি দেবীর একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন- ‘ভরা থাক স্মৃতি সুধায়’। শংকর চক্রবর্তী ও সোনালি চক্রবর্তীর একমাত্র কন্যা সাজি। কর্মসূত্রে মুম্বইতে থাকে সে, তবে মায়ের অসুস্থতার জন্য কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে।
সোনালি চক্রবর্তীর অকাল মৃত্যুতে শোকাহত টলিউড। অভিনেত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। তাঁকে শেষবিদায় জানাতে শশ্মানে হাজির হয়েছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দন সেন, দিগন্ত বাগচী, সোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র মিত্র, রানা মিত্র, জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায়ের মতো টলিপাড়ার সহকর্মী-বন্ধুরা। রাজ্য সরকারের তরফে সোনালি দেবীকে শেষবিদায় জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।