খুব কম মানুষই হয়তো পারবেন এভাবে লড়তে। সত্যিই তো, ক্যানসারের সঙ্গে দু-দুবার লড়াই করা, তাকে হারিয়ে জীবনের ছন্দে ফেরা এতই কী সহজ! একবার অভিনেত্রী দিদি নম্বর ১-এ এসে শুনিয়েছিলেন কেমোর পর সব চুল পড়ে যাওয়ায় একদিন আয়নায় নিজেই নিজেকে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
২০১৫ সালে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৭-১৮। হয়েছিলেন বোনম্যারো ক্যানসার। থাকতেন তখন বহরমপুরে। চিকিৎসার পরের জটিল কেমো তাঁর শরীরকে অর্ধেক করে দিয়েছিল। অভিনেত্রী অকপটে জানিয়েছেন, কেমো নেওয়ার পরে মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল। বিকৃত হয়ে গিয়েছিল চোখ-মুখও। সেই অবস্থায় রাতে বাথরুমে গিয়েছেন তিনি। কেমোর জন্য মুখে জ্বালা করছিল। আরাম পেতে জলের ঝাপটা দেন। আর তারপর আয়নায় তাকিয়ে নিজেকে দেখেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘আমিই যদি নিজেকে এত ভয় পাই, তা হলে বাইরের লোকেদের কী অবস্থা হয়েছিল?’ ঐন্দ্রিলার কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল সবার। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা সেট। রচনা তো ভাষাই হারিয়ে ফেলেছিলেন।
দ্বিতীয়বার ক্যানসার ধরা পড়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। খুব শখ করে প্ল্যান করেছিলেন রোম্যান্টিকভাবে কাটাবেন ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কিন্তু সেই বিশেষদিনেই ফের অসুস্থ হন। চিকিৎসকরা জানায় এবার ক্যানসার ফুসফুসে। তখন তো অর্ধেকটা ফুসফুসই বাদ চলে যায়। ফের নিতে হয় কেমো। কিন্তু এবারে ঐন্দ্রিলার হাতখানা শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন সব্যসাচী। আদর, ভালোবাসা, ভরসায় ভরিয়ে দিতেন মেয়েটাকে। তাই ঐন্দ্রিলা পরেরবার দিদি নম্বর ১-এ এসে জোর গলায় বলতে পেরেছিলেন, ‘শারীরিক কষ্ট পেলেও মানসিক কষ্ট এবার একটুকুও পাইনি।’
আজ আর তিনি নেই। ২০ তারিখই চলে গেলেন সকলকে কাঁদিয়ে। এত অনুরাগীর প্রার্থনা, বাবা-মায়ের এত লড়াই তাঁকে নিয়ে, সব্যসাচীর এত ভালোবাসা, কিছুই আর ফেরাতে পারল না তাঁকে। ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোক, তারপর ১৬ নভেম্বর হার্ট অ্যাটাক, ফের ১৯ নভেম্বরের হার্ট অ্যাটাকে শেষ হয়ে গেল সবটা।
যেখানে গেলে, সেখানেই ভালো থেকো ঐন্দ্রিলা!