আশির দশকের শেষে দূরদর্শনের পর্দায় ম্যাজিক তৈরি করেছিল রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। সাড়ে তিন দশক পর ফের চর্চায় দূরদর্শনের সেই আইকনিক শো। প্রভাস-কৃতি শ্যাননদের ৫০০ কোটির ‘আদিপুরুষ’ দেখে বিতর্কের ঝড়। ছবির সংলাপ থেকে চিত্রায়ন, ভিএফএক্স থেকে চরিত্রদের পোশাক, সব নিয়েই হয়েছে সমালোচনা। বাল্মিকীর রাময়ণ নির্ভর ‘আদিপুরুষ’-এর সমালোচনায় সরব হয়েছেন দূরদর্শনের রামায়ণ-এর রাম-সীতা-লক্ষ্মণরা।
‘আদিপুরুষ’ দেখে অসন্তুষ্ট পর্দার ‘অরিজিন্যাল রাম’ অরুণ গোভিল। ক্ষোভ উগরে তিনি জানিয়েছেন, সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে ‘আদিপুরুষ’ তৈরি করেননি নির্মাতারা। তাহলে দর্শকরা তাঁদের ভাবনার কদর করত। ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিকে ‘রাম’ চরিত্রে অভিনয় করে অকল্পনীয় জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অরুণ গোভিল, আজও রাস্তাঘাটে তাঁকে দেখলে পা ছুঁয়ে প্রণাম করে মানুষ।
তাঁকে প্রভু শ্রীরাম ভেবে পুজো করেছেন যে মানুষজন, তাঁদের আস্থার কদর আজও করেন অভিনেতা। অতীতের এক স্মৃতি হাতড়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মনে আছে, একদিন শ্যুটিং সেটে মেক-আপ করে আমি টি-শার্ট আর শর্টস পরে বসেছিলাম। একজন মহিলা সেটে হাজির হয়েছিলেন ভগবান রামকে দেখতে। উনি কাঁদছিলেন, খুব চিন্তিত ছিলেন। সেটের লোকজনেরা ওঁনাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। মহিলার কোলে একটা বাচ্চা ছিল, উনি আমার সামনে এসে নিজের সন্তানকে আমার পায়ের তলায় রেখে দিলেন। বললেন, ’আমার বাচ্চা মরতে বসেছে, ওকে বাঁচান প্রভু'। আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, ওকে হাসপাতালে নিয়ে যান। উনি নিজেই আমার হাতটা ধরে বাচ্চার কপালে ছোঁয়ালেন। আমি শিশুটির দ্রুত আরোগ্য কামনা করি, আর বলি যান ওকে হাসপাতালে নিয়ে যান'।
অরুণ গোভিল যোগ করেন, ‘তিনদিন পর ওই অসুস্থ শিশু মায়ের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে সেটে আসে। ওর সেরে ওঠায় আমার কোনও হাত নেই। কিন্তু ভগবান রামের প্রতি ওর মায়ের যে বিশ্বাস, আমার রামের প্রতি যে আস্থা-- তার জেরেই সবটা সম্ভব হয়েছিল। এটাই আস্থা, সমপর্ণ। ধর্ম নিয়ে যখন সিনেমা বানানো হয়, ভগবানের প্রতি এবং তাঁর ভক্তদের প্রতি এই ধরণের আস্থা আর বিশ্বাস নির্মাতাদের থাকা উচিত’।
গত বছরের শেষে ভাইরাল হয়েছিল একটি ভিডিয়ো, যেখানে এক মহিলাকে অরুণ গোভিলের পা-এ সষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে দেখা গিয়েছিল। ৩৫ বছর পরেও রাম হিসাবে অরুণ গোভিলে গ্রহণযোগ্যতা ভারতবাসীর মনে এতটুকুও কমেনি, এই ভিডিয়োই তার প্রমাণ।