ধ্রুপদী সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আমজাদ আলি খানের জন্ম হয় এক স্বনামধন্য সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে। যাঁর জন্মসূত্রে নাম ছিল মাসুম আলি খান। গোয়ালিয়র রাজসভার সভাগায়ক হাফিজ আলি খান ও রাহাৎ জাহানের ছয় সন্তানের কনিষ্ঠ সন্তান হলেন মাসুম। পরে এক সাধু তাঁর নাম পরিবর্তন করে আমজাদ রাখেন। সম্প্রতি, হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন আমজাদ আলি খান।
সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমজাদ আলি খান বলেন, তিনি যখনই বিদেশে অনুষ্ঠান করতে যান, তখন তিনি 'আস-সালামু আলাইকুম' বা 'আদাব' বলেন না। বলেন 'নমস্তে' (নমস্কার), কারণ তাঁর পরিচয় আসলে একজন ভারতীয়। সাক্ষাৎকারে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে তাঁর কথায় উঠে আসে হিন্দু-মুসলিম প্রসঙ্গ। বলেন, এখন যা চলছে তা বন্ধ হওয়া দরকার।' বলেন,'এই দেশের নাগরিকরা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আদপে একজন ভারতীয়'।
আরও পড়ুন-'ম্যাকবেথ'-এর ছাঁচে নারীকেন্দ্রীক ছবি, 'মায়া' মিথিলার অঙ্গুলি হেলনে গল্পের পথ চলা
জীবনের প্রথমদিকে আমজাদ আলি খানের পরিবার তাঁর বিয়ে দিলেও সেই বিয়ে টেকেনি। পরে নামী ভারতনাট্যম শিল্পী শুভলক্ষ্মী বড়ুয়াকে বিয়ে করেন আমজাদ আলি খান। যিনি কিনা আদপে অসমের বাসিন্দা। তবে আমজাদকে বিয়ে করলেও ধর্মান্তরিত হতে হয়নি। শুভলক্ষ্মীকে বিয়ে নিয়ে আমজাদ আলি খান বলেন, ‘হিন্দু-মুসলিম বিয়ে আমাদের দেশে মোটেও সহজ নয়, সেসময়ও ছিল না। আর এখন তো নয়ই। তবে ভালোবাসা ধর্ম দেখে তো আসেনা। এটা উপরওয়ালার খেলা। আমাদের এই দুজনের সংসারে সবথেকে বড়ো কথা, আমরা একে অপরকে আমরা বুঝি। সেটা একই ধর্মে বিয়ে হলেও অনেক সময় হয় না। আবার ভিন্ন ধর্মে বিয়ে হলেও হয়না। তবে আমি ভাগ্যবান যে আমি বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি থেকেও ভালোবাসা পেয়েছি।’
তবে স্বামীর সঙ্গে কিছুটা ভিন্ন মত জানিয়ে শুভলক্ষী বলেন, 'এটা কঠিন বিয়ে ছিল না ঠিকই, তবে হ্যাঁ, বিয়েটা একটা আমার পরিবারের কাছে ধাক্কা তো ছিলই। কারণ হাজার হোক ভিন ধর্মে বিয়ে। তবে সব ঠিক হয়ে যায়। বিয়ের পর আমি নাচ ছেড়ে দি। কারণ, শিল্প আমার ভালোবাস ছিল, পেশা নয়। আর উনি ব্যস্ত ছিলেন, তাই আমি সংসারের দায়িত্ব নি।'