পুজোর লড়াই এই বছর জমজমাট। এর মাঝে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়ের ছবি মানেই বাড়তি আকর্ষন। পুজোয় রক্তবীজ নিয়ে হাজির তাঁরা। এই ছবি দর্শকদের উপহার দিচ্ছে নতুন জুটি, আবির ও মিমি। ছবির অন্যতম বড় চমক ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কামব্যাক। এই ছবিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে ‘মন্দার’ দেবাশিস মণ্ডলকে।
টলিউডের নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের অন্যতম দেবাশিস। রক্তবীজে অভিনয় করতে গিয়ে রক্তও ঝরিয়েছন তিনি। ছবি মুক্তির আগে কি ফিরে আসছে সেই স্মৃতি? হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানালেন, ‘হ্যাঁ,ওটা অ্যাক্সিডেন্টালি হয়ে গিয়েছিল। অ্যাকশন সিকুয়েন্সে আমাকে ছুড়ে ফেলার একটা সিন ছিল, ধাক্কা লাগারই কথা ছিল। আচমকা একটা মাটির কলসী এসে লাগে। ওটা শেষদিনের শ্যুটিং ছিল, আর শেষ সিকুয়েন্স ছিল। রক্ত ঝরছিল ঠিকই, কোনওরকমে সামলে নিয়ে শ্যুটিং শেষ করি। বলতে পারেন ব্যাড রিস্ক নেওয়া হয়েছিল। জানতাম ওটা কোথাউ না কোথাউ লাগবেই, তবে মাথা ফেটে যাবে আশা করিনি।’
মন্দার সিরিজের হাত ধরে চর্চায় উঠে আসেন ন্যাশন্যাল স্কুল অফ ড্রামার এই প্রাক্তনী। কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট নিয়ে প্রশ্ন করতেই জবাব, ‘মন্দার-এর অফারটা অনির্বাণ দিয়েছিল, চিত্রনাট্য ভালো ছিল, তাই সাড়া ফেলেছিল। আমি চেষ্টা করেছি যতটুকু সুযোগ পেয়েছি চিত্রনাট্যে ততটুকু ভালো কাজ করার। শিবুদা-নন্দিতাদির সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল বহুদিনের। ওঁনাদের গল্প বলার ধরণ আমার খুব ভালো লাগে, বলতে পারেন সেই ইচ্ছে-র সময় থেকে। আমার চরিত্রটার স্ক্রিনটাইম খুব বেশি না হলেও ইমপ্য়াক্টফুল একটা চরিত্র।’ আরও পড়ুন- খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ছায়া আবির-মিমির ‘রক্তবীজ’-এ, রাষ্ট্রপতি প্রণব হয়ে ফিরছেন ভিক্টর?
এই ছবিতে ‘জেহাদি’ মুনীরের চরিত্রে রয়েছেন দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘মুনীর একজন বিপ্লবী, একজন জেহাদি। সে নিজের সম্প্রদায়ের হয়ে লড়ছে। ওর লড়াইটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে। এই ছবিটা খাগড়াগড়ের ঘটনার উপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে। সেই ঘটনাটা মানুষ পড়েছে, শুনেছে। সেটা নিয়ে প্রথমবার ছবি হচ্ছে। ছবিতে পুজোটা খুব প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমবার শিবুদা-নন্দিতাদি এইরকম একটা জঁর নিয়ে কাজ করছে। মেকিংটা খুব ভালো হয়েছে'।
এক ছবিতে কাজ করলেও জীবন্ত কিংবদন্তি ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা হল না, সেই আক্ষেপ নিয়ে অভিনেতা বললেন, ‘আমার চরিত্রের ওঁনার সঙ্গে কোনও শট ছিল না। একদিনে শ্যুট করেছি, পাশাপাশি ভ্যানিটি ছিল, দেখা হয়েছে ওঁনার সঙ্গে কিন্তু স্ক্রিন শেয়ার করা হয়নি। আশা করি ভবিষ্য়তে সুযোগ পাব। ওঁনাকে ছোট থেকে দেখে আসছি, উনি আমার অনুপ্রেরণা। উনি যেভাবে নিজের অভিনয় কেরিয়ার সাজিয়েছেন- সেটা আঞ্চলিক ছবি হোক আন্তর্জাতিক- সত্যি শেখার মতো। ভবিষ্যতে কাজ করার সুযোগ পেলে ভালো লাগবে।’
অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেবাশিসের সুসম্পর্কের কথা কারুর অজানা নয়। এবার বক্স অফিসে মুখোমুখি লড়াইয়ে দু-জনের ছবি। কম্পিটিশন নিয়ে প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘সিনেমায় কোনও কম্পিটিশন হয় না। সিনেমা তো দিনের শেষে একটা আর্ট। যে দর্শক যে ধরণের ছবি দেখতে চান, সেই ছবি হলে গিয়ে দেখবেন। যদি কেউ সব ছবি দেখতে চান, সেটাই দেখবেন।’ রক্তবীজ দেখার পর কি দেবাশিস দশম অবতারকেই বাছবেন, দ্বিতীয় অপশন হিসাবে? মুচকি হেসে জবাব দিলেন, ‘আমার সবকটা ছবিই দেখবার ইচ্ছে আছে। আমি সৃজিতদা-র ফ্যান, বাইশে শ্রাবণ আমার দুর্দান্ত লেগেছিল। দশম অবতারের ট্রেলার ফাটাফাটি লেগেছে। বাঘাযতীন-ও দেখার ইচ্ছা আছে। দেবের লুকগুলো খুব এক্সাইটিং। মিতিন মাসি-র আমি খুব বড় ফ্যান নই, সম্ভব হলে দেখব না হলে পরে ওটিটি-তে দেখে নেব’।