‘ত্রিনয়নী’ হিসাবে দর্শকদের মন জিতেছেন তিনি। এরপর ‘দেশের মাটি’র নোয়া হয়ে দীর্ঘদিন টিভির পর্দায় রাজ করেছেন। তবে দীর্ঘ ১০ মাস মেগা সিরিয়াল থেকে গায়েব শ্রুতি! ফ্যানেরা যে প্রচণ্ড মিস করছে তাঁকে, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এর মাঝেই শ্রুতি দাসের ফ্যানেদের জন্য দারুণ খবর। কালার্স বাংলার ‘মহালয়া’ স্পেশ্যাল অনুষ্ঠান ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’র অংশ হচ্ছেন শ্রুতি। দেবী কালী রূপে ধরা দেবেন অভিনেত্রী। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় ধরা দিলেন ‘ত্রিনয়নী’ শ্রুতি।
এবার কালার্স বাংলার মহালয়ার অংশ, একটানা পরপর তিন বছর ‘মহালয়া’ স্পেশ্যাল অনুষ্ঠানে। কেমন অভিজ্ঞতা?
শ্রুতি: আমার তিন বছরের কেরিয়ারে একটানা তিনবার মহালয়ার অংশ হতে পেরেছি। এর জন্য সত্যি আমি ধন্য। প্রথমটা জি বাংলায় করেছি, দ্বিতীয়টা স্টার জলসায় আর এবার কালার্স বাংলায়। প্রথম কথা হচ্ছে, কালী চরিত্রের সঙ্গে আমি নিজেকে একাত্ম করতে পারি কারণ এটা শক্তির একটা রূপ, তার সঙ্গে নাচ উপরি পাওনা। বোল্ড আর স্ট্রং একটা চরিত্র করতে আমি সবসময়ই ভালোবাসি। কালীর চরিত্রে অভিনয় করাটাই একটা বিরাট আর্শীবাদ। আমি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রযোজনা সংস্থা সুরিন্দর ফিল্মসকে ধন্যবাদ জানাব। সব মিলিয়ে একটা দুর্দান্ত একটা অভিজ্ঞতা।
এবার কি কালার্সের মেগায় দেখা যাবে শ্রুতিকে? কামব্যাক নিয়ে কী ভাবনা?
শ্রুতি: না, এমন কোনও ব্যাপার নয়। এখন যেহেতু আমি স্টার বা জি-তে কাজ করছি না তাই… আসলে আমার কাছে যেটুকু খবর আছে, সমস্ত চ্যানেলই আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইছে। আমার চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও হয়েছে, তবে আমার মতো চরিত্র এখনও আসেনি, তাই আমি কাজ করছি না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রুতি বরাবর রাখঢাকহীন, স্পষ্টবক্তা। এরজন্য ট্রোলডও হতে হয় পুরোদমে, আফসোস হয়?
শ্রুতি: আমি খুব কম সময়ের মধ্যে দীর্ঘদিন কাজ করা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের থেকে আমার ভক্ত সংখ্যা বাড়াতে পেরেছি (সোশ্যাল মিডিয়ায়)। আমার ভিতর নিশ্চয় কিছু না কিছু আছে, সেটা জানি না কী আছে! হতে পারে সেটা আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হতে পারে, কিংবা আমার কাজের গুণ হতে পারে, আমাকে মানুষ ভালোবাসে সেটাও হতে পারে- অনেক পুরোনো শিল্পীদের চেয়েও আমার ফলোয়ার্স সংখ্যা বেশি। সেখানে সব মানুষ আমাকে পছন্দ করবে এমনটা তো আর আশা করতে পারি না। তবে আমি আমার ফলোয়ার্সদের সঙ্গে কানেক্টেড থাকতে ভালোবাসি, ওরা আদতে আমার ফ্যামিলি বা বলতে পারো আমার জীবনের এঞ্জেল। তাই ১০ মাস আমি টেলিভিশন থেকে গায়েব থাকলেও, মানুষের মধ্যে সমানভাবে আমার জনপ্রিয়তা বজায় আছে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষজন আমাকে নিয়ে চর্চা করে- এটা আমার কাছে একটা আর্শীবাদ।
প্রেম সম্পর্ক যেখানে নায়িকার গোপন রাখে, সেখানে শ্রুতি শুরু থেকেই প্রেম নিয়ে অকপট, কেন?
শ্রুতি: আসলে আজকের দিনে মানুষজন সম্পর্ক নিয়ে কনফিডেন্ট নয়। আমাদের নিজেদের উপরই ভরসা নেই, যদি দু-দিন পর সম্পর্কটা না টেকে তখন মানুষ আমাকে উলটোপালটা বলবে। তবে তোমার যদি নিজের মধ্যে নিজেদের সম্পর্টার বিশ্বাস থাকে- যে আমি যার সঙ্গে সম্পর্কে আছি, আমি তাকেই বিয়ে করব-তাহলে খোলাখুলি সেই প্রেম স্বীকার করে নিতে কুন্ঠাবোধ হয় না। আমাদের দুজনের মধ্যেই সেই বিশ্বাসটা আছে।
প্রযোজক-পরিচালক (স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার) বয়ফ্রেন্ড হওয়া সত্ত্বেও শ্রুতির হাতে কাজ নেই- এমন ট্রোলিং-এর কী জবাব দেবে?
শ্রুতি: যদি আমি ওর সঙ্গে কাজ করি, তখন ওর বা আমার হেটার্সরা বলবে, শ্রুতি দাস অন্য কোথাউ কাজ পাচ্ছে না। কদিন আগে দেখলাম একজন বলছে, ‘ওকে তো ইন্ডাস্ট্রি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার দিয়েছে’। ইন্ডাস্ট্রি থেকে আমাকে কেউ ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করেনি বরং এখনও ইন্ডাস্ট্রির লোকজন সবাই আমাকে আদর-যত্ন করেন, আমার সবার সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ইন্ডাস্ট্রির খুব কম মানুষই আমার শক্রু, যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন না। তবে আমাকে এখন থেকে বার করবার মতো নিম্নবিত্ত মানসিকতা কারুর নেই। এতোকিছু বাদ দিয়ে যদি আমি স্বর্নেন্দুর সঙ্গে কাজ করি, তাহলে সবাই বলবে শ্রুতি অন্য জায়গায় কাজ পাচ্ছে না, ওর বয়ফ্রেন্ড আছে তাই কাজ দিচ্ছে। সেই জন্য এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না স্বর্নেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে কাজ করতে। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ও আমার লাইফটাইম অ্যাসেট। আমার হারানোর কিচ্ছু নেই। কিন্তু আমি স্বর্নেন্দুর ভরসায় ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি। তাই আমি কাজ পাচ্ছি না এটা ভুল, আমার মতো চরিত্র পাচ্ছি না বলে করছি না।