মুম্বই স্বপ্নের শহর হতে পারে। আবার একই সঙ্গে এই শহরই বহুমানুষের স্বপ্ন ভঙ্গও করেছে। স্বপ্ন দেখার জন্য আকাশ-ই হয়ত শেষ সীমানা। তবে গগনচুম্বি এই স্বপ্নকে সত্যি করতে গিয়ে অনেক মানুষ হারিয়েও গিয়েছেন, অনেকের জীবনও শেষ হয়ে গিয়েছে মুম্বই শহরে। বুধবার ৪ বারের জাতীয় পুরস্কার বিজেতা আর্ট ডিরেক্টর নীতীন দেশাই-এর আত্মহত্যা হয়ত সেকথাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
জানা যাচ্ছে নবী মুম্বইতে ৫২ একর জমির উপর স্টুডিও বানাতে গিয়ে ২৫২ কোটি টাকার ঋণের বোঝা চেপে ছিল নীতীন দেশাই-এর মাথায়। আর সেকারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। বন্ধু নীতিনের এমন পদক্ষেপে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের জীবনেরও কিছু কঠিন সত্যি তুলে ধরেছেন পরিচালক হনসল মেহেতা। জনিয়েছেন 'সীমরন' ছবিটি বানানোর পর তিনিও কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছেন।
হনসল মেহেতা লিখেছেন, 'আবেগের উপর চালিত এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আর্থিক চাপ অনেক সময় দুর্বল করে দেয়। বিশেষ করে ওমের্তা এবং সীমরনের মতো ছবি বানানোর পরে তিনিও অনেক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সিনেমার দুনিয়ায় ব্যর্থ হওয়ার পর আমিও ঘৃণার চক্রে পড়েগিয়েছিলাম যা আমাকে ভীষণ অন্ধকার জায়গায় ঠেলে দিয়েছিল। এখানে কিছু 'শক্তিশালী' মধ্যস্থতাকারীদের কারণে তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। এটি একটি ভীতিকর সময় ছিল'।
আরও পড়ুন-পুরুষ থেকে নারী হয়েছেন, অভিনয়ে পা রেখে কী বলছেন রূপান্তরকামী চিকিৎসক ত্রিনেত্রা?
আরও পড়ুন-‘নীতীনের মৃত্যুতে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি, আজ OMG-2এর ট্রেলার বের করব না’, জানালেন অক্ষয়
হনসল মেহেতা আরও লিখেছেন, অতীতে আমিও নিজের ক্ষতি করতে চেয়েছি। প্রায়ই আবেগের সঙ্গে লড়াই করেছি। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে আমি পরিবার এবং কিছু সত্যিকারের বন্ধুদের দ্বারা সান্ত্বনা পেয়েছি, যাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারি। কিন্তু যখন আমি একা ছিলাম সেসময়টা আমার কাছে ছিল গভীর, অন্ধকার এবং অন্তহীন সুড়ঙ্গের মতো ছিল। অনেক সময় এমনও হয়েছে যে আমার কাছে শেয়ার করার মতো কোনও ধারণা নেই, কোনও সৃজনশীল চিন্তাও নেই। তখন নিজেকে শিল্পী ও মানুষ হিসাবে আশেপাশের সকলের থেকে নিকৃষ্ট মনে হত। তবে কোনওভাবে বিশ্বাস করতাম এই অন্ধকারের অবসান ঘটবে এবং নিজেকে কাজে নিমগ্ন রাখতাম, এভাবেই আমি ভয়ঙ্কর সময় থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছি।'
সবশেষে হনসল মেহেতা লিখেছেন, ‘মহান নীতীন দেশাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং তাঁর সমস্যার কথা জানার পর আমিও আবার সেই পুরনো সময় ফিরে গিয়েছিলাম। একজন অসাধারণ শিল্পী হারিয়ে যাওয়ায় খুবই দুঃখিত। ওম শান্তি।’