গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিনে মারাত্মক বিতর্ক শুরু হল ইজরায়েলের চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং উৎসবের জুরি নাদাভ লাপিডের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। সেখানে তিনি‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’কে একটি অশ্লীল, এবা প্রোপাগান্ডা ছবি বলে মন্তব্য করেন। এবার তাঁর সেই মন্তব্য প্রেক্ষিতে তাঁকে একহাত নিলেন ভারতে সে দেশের রাষ্ট্রদূত নায়োর গিলন।
একের পর এক ট্যুইটের সিরিজে নাদাভ লাপিডের তীব্র সমালোচনা করেছেন নায়োর গিলন। কী কী বলেছেন তিনি?
- ‘নাভাদ লাপিডের সমালোচনা করে এই চিঠিটি লিখছি। এটি ভারতের ভাই-বোনেরা বুঝতে পারবেন। কারণ এটি হিব্রুতে লেখা নয়’
- ‘ভারতে অতিথিদের দেবতা হিসাবে মনে করা হয়। আপনাকে (নাদাভ লাপিড) গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অতিথি হিসাবেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
- ‘ভারতে আরও দুই ইজরায়েলের শিল্পীকে নিয়ে আসা হয়েছে। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি তাঁদের ভালোবাসার কারণেই এটি করা হয়েছে। আপনাকেও সেই কারণেই ডাকা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।’
- ‘আমি চলচ্চিত্র বোদ্ধা নই। কিন্তু আমি মনে করি, কোনও ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করার আগে সেই বিষয়ে ভালো করে পড়াশোনা করা উচিত।’
- ‘আমি নিজে হলোকস্টের শিকার। কাশ্মীরে যা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করার আগে তাই ভালো করে জেনে বুঝে নেওয়া উচিত।’
- ‘আমি বলেছেন, কাশ্মীর এবং ইজরায়েলে যা ঘটেছে, তার মধ্যে মিল আছে। আমি আপনাকে পরামর্শ দেব, স্বাধীনভাবে ইজরায়েলের সমালোচনা করুন। কিন্তু নিজের হতাশা অন্য দেশের উপরে ঢালবেন না।’
- ‘আপনি ভাববেন, খুব সাবসী মন্তব্য করে দেশে ফিরছেন। কিন্তু আমরা যারা ইজরায়েলের প্রতিনিধি হিসাবে ভারতে থাকব, তাদের উপর এর প্রভাব পড়বে। ভারত এবং ইজরায়েলের বন্ধুত্ব খুব দৃঢ়। আপনার ধাক্কার পরেও সেটি টিকে যাবে।’
- ‘আমি আমন্ত্রণকারীদের কাছে আপনার এই আচরণের জন্য এবং একজন মানুষ হিসাবেও ক্ষমা চাইব।’
প্রসঙ্গত কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরার পুরস্কার জয়ী খ্যাতনামা ইজরায়েলি পরিচালক নাদাভ লাপিডে এই উৎসবে এসে মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমরা সাতটি ছবি দেখেছি ডেবিউ কম্পিটিশনে, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে ১৫টি ছবি দেখেছি— যা এই ফেস্টিভ্যালের মূল আকর্ষন। ১৫টির মধ্যে ১৪টি ছবির মধ্যে সিনেম্যাটিক কোয়ালিটি ছিল, ত্রুটিও ছিল এবং তা নিয়ে একটা গঠনমূলক আলোচনাও হয়েছে’। কিন্তু তাল কাটে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ছবি ঘিরেই। পরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকে খুব অস্বস্তিবোধ করেছি, হতবাক হয়েছি ১৫ নম্বর ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে। সকলের কাছেই এটি একটি অশ্লীল প্রোপাগান্ডা ছবি বলে বিবেচ্য হয়েছে।’ কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং কেন্দ্রীয় তত্য-সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগানের উপস্থিতিতেই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে তোপ দাগেন ইফির জুরি চেয়ারম্যান।