'গ্রামের মহিলারা কাঞ্চনকে দেখলে রিঅ্যাক্ট করছে', এই কারণেই শুক্রবার কোন্ননগরে বিধায়ক কাঞ্চনকে প্রচারসঙ্গী করলেন না কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মাসেই কাঞ্চন-শ্রীময়ীর রিসেপশনে হাজির ‘দাদা’ কল্যাণ এদিন সরাসরি জিপ থেকে নেমে যেতে বলেন কাঞ্চনকে। সেই নিয়ে বিরোধী শিবিরে হাসির রোল। দলীয় বিধায়কের সঙ্গে বিদায়ী সাংসদ তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থীর এই আচরণ ঘিরে নানা মুনির নানা মত। আরও পড়ুন-কাঞ্চনকে গাড়ি থেকে নামালেন কল্যাণ, হাসপাতালে ভর্তি ‘কচি বউ’ শ্রীময়ী, হলটা কী?
সাংসদের এই আচরণে তিনি মর্মাহত বলে জানান কাঞ্চন মল্লিক। এই ঘটনা নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে যায় তখন কল্যাণ বলেন, ‘আমি তো তোমায় আগের দিনই বললাম গ্রামে এসো না। রিয়্যাক্ট করছেন মহিলারা।’ কিন্তু কেন রি-অ্যাক্ট করছেন তা খোলসা করেননি কল্যাণবাবু। নিন্দকদের ধারণা দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে হাঁটুর বয়সী শ্রীময়ী চট্টরাজকে বিয়ে করা নিয়েই গ্রাম্যবধূদের চক্ষূশূল হয়েছেন কাঞ্চন। যদিও কাঞ্চন ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না!
কাঞ্চনের কথায় চৈত্র সংক্রান্তিতেও তিনি গ্রামে গিয়ে শো করেছেন, কিন্তু মহিলাদের তরফে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তাঁর চোখে পড়েনি। এই বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল কাঞ্চনের প্রাক্তন স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। গোটা ঘটনার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েন পিঙ্কি, বেশ হতচকিত তিনি। টিভি নাইন বাংলাকে কাঞ্চনের প্রাক্তন বলেন, ‘ও মা সে কী! কাঞ্চনকে জিপ থেকে নামিয়ে দিয়েছে নাকি।’ তবে এই নিয়ে বিস্তারিত কিছু মন্তব্য করতে চাননি পিঙ্কি। তিনি বলেন, ‘ও মা! কী বলুন তো, এসব আমার আর ভাল লাগে না জানতে। আমি নিজেকে নিজের মতো গুটিয়ে নিয়েছি এই সব থেকে। নিজের মতোই থাকছি।’
কাঞ্চনের সঙ্গে পিঙ্কির ডিভোর্স পর্ব মিটেছে জানুয়ারি মাসে। আর মাস ঘুরতেই শ্রীময়ীকে আইনিভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেন কাঞ্চন। ২রা মার্চ ধুমধাম করে বিয়েটা সারেন। কাঞ্চন-শ্রীময়ীর বিয়ের একাধিক ছবি-ভিডিয়ো সোশ্যালে ভাইরাল হতেই ট্রোলের মুখে পড়েছিলেন বিধায়ক। পিঙ্কি ও তাঁর ১০ বছরের শিশুপুত্রের প্রতি সমব্যাথী নেটপাড়া।
লোকসভা নির্বাচনে কাঞ্চনকে তারকা প্রচারকদের তালিকায় রাখেনি দল। নিন্দকরা বলছিল, তৃণমূলে অনেকটাই কোণঠাসা উত্তরপাড়ার বিধায়ক। কল্যাণের পদক্ষেপে ব্যাথিত কাঞ্চন বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি। গিয়েছিলাম দলীয় প্রচারে। আগেও কল্যাণবাবুর সঙ্গে প্রচারে গিয়েছি। আজ হঠাৎ করেই উনি বললেন, ‘যেও না, গ্রামের মহিলারা রিঅ্যাক্ট করছে। সরি টু সে, আমায় তো ভোটটা করতে হবে। আমিও চলে এসেছি। জানি না তিনি কেন চাননি, হয়তো তাঁর প্রচারের আলাদা কোনও স্ট্র্যাটেজি আছে।’
ওদিকে গোটা ঘটনায় দল কল্যাণের পাশে রয়েছে। এদিন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'সামাজিক মাধ্যমে যে রুচিতে, যে ভঙ্গিতে যেসব বিষয় তিনি সামনে আনেন, সেই বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক হাওয়া উচিত।’