যত দিন যাচ্ছে ততই যেন জটিল হচ্ছে জি বাংলার ধারাবাহিক ‘কার কাছে কই মনের কথা’-র গল্প। ধারাবাহিকের শুরু থেকেই সাংসারিক কূটকাটালিকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে এই মেগা। যেখানে প্রোমোতে দেখানো হয়েছিল পাড়ার বউদের মধ্যেকার একটা শক্তিশালী বন্ধুত্বই হবে ছবির গল্প। তবে, ইতিমধ্যেই একাধিক নেতিবাচক দৃশ্য দেখিয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে এই ধারাবাহিককে।
‘কার কাছে কই মনের কথা’ সিরিয়ালের প্রথম যে দৃশ্যটি নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল নেটপাড়া তা হল ফুলশয্যার খাটে মা আর ছেলের ঘুমানো। ছেলের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে মা। আর নতুন বউয়ের জায়গা হয়েছে সোফায়। এরপর একটি দৃশ্যে দেখানো হয় শিমুলের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই তার সঙ্গে শারীারিক সম্পর্ক গড়ে পরাগ। যা বৈবাহিক ধর্ষণ ছাড়া কিছুই নয়। এছাড়া বাপের বাড়ি যেতে না দেওয়া, পাড়ার লোকের সঙ্গে মিশতে না দেওয়া, রাত-বিরেতে বাড়ি থেকে বের করার মতো দৃশ্য তো ছিলই।
বর্তমানে দেখানো হচ্ছে পরাগ আর শাশুড়ি মধুবালার অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাড়ার ফাংশনে নাচ করে নতুন বউ শিমুল। সে ফাংশনে ঘোমটায় মুখ ঢেকেই নাচ করে। যা দেখে তারিফও করে মধুবালা। নাচ শেষ হলে, মঞ্চে শিমুলের শাশুড়িকেই ডেকে নেয় উদ্যোক্তরা। বলে মুখ ঢাকা নতুন মেয়েটির হাতে সম্মান তুলে দিতে। তবে ‘রানি’র ভূমিকায় নাচ করা মেয়েটি মুখের ঘোমটা ওঠাতেই দেখা যায় ওটা আলে শিমুলই। আর তাতেই রেগে কাঁই হন মধুবালা।
মধুবালা বলে ওঠেন, ‘সে কি তুমি!’ আর যাতে শিমুলের জবাব, ‘আমি আজ আমার জীবনের সেরা সম্মান পেয়ে গিয়েছি। আমার শাশুড়ি মা আমার হাতে পুরস্কার তুলে দিল। আমি মানছি একটু ছলনার আশ্রয় নিয়েছি। আমার নাম শিমুল ব্যানার্জী। আমি আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জানতে দিতে চাইনি আসলে আমি নাচ করছি। তবে আমার শাশুড়িমা আমার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ায় আমি খুব খুশি।’
তবে শিমুলের কথা শেষ হতেই গালে ঠাটিয়ে থাপ্পড় মারে মধুবালা। বলে ওঠে, ‘ঘোমটার নীচে খ্যামটা। এত বড় সাহস তোমার।’ যদিও তখনই রুখে দাঁড়ায় শিমুলের পাড়ার বান্ধবীরা। বলে ওঠে, ‘জানেন বাড়ির বউ-এর গায়ে হাত দিলে থানা পুলিশ হতে পারে।’ যাতে শিমুল বলে ওঠে, ‘মা আপনি নিজেকে ছোট করবেন না। এই যে আপনি আমার গায়ে হাত দিলেন তাতে নিজেকেই ছোট করলেন। আমার কিছু হল না।’
কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিতর্কিত গল্পের কারণে টিআরপি-র সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে কার কাছে কই মনের কথা। পিছনে ফেলে দিয়েছে ওই স্লটে আসা কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজকে। তবে দর্শকদের একাংশের জোরালো প্রতিবাদ উঠছে, কীভাবে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও একটা ধারাবাহিক বৈবাহিক শারীরিক ও যৌন নিগ্রহণকে এমনভাবে তোল্লাই দিতে পারে। এগুলোকে হাতিয়ার করেই বেছে নিতে পারে টিআরপি বাড়ানোর রাস্তা।